প্রতীকী চিত্র।
বিধানসভা ভোটে পাহাড়ে দুটো আসন পেলেও দার্জিলিং নিয়ে সমস্যা বাড়ছে বিজেপির অন্দরে। আগামী সপ্তাহে দলের পাহাড়ের জোটসঙ্গী জিএনএলএফ প্রতিনিধিরা দিল্লি যাচ্ছেন। তাঁরা সাংসদ রাজু বিস্তার সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে দলের নেতারা দেখা করবেন বলে ঠিক করেছেন। দলের নেতৃত্বে থাকছেন মন ঘিসিংয়ের ঘনিষ্ঠ দার্জিলিং মহকুমা সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড।
গত মঙ্গলবার তিনি কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়ে দিয়েছেন, রাজু বিস্তার মেয়াদকালে বা আগামী ২০২৪ সালের মধ্যে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী সমাধান না হলে বিজেপি যেন আগামী দিনে দার্জিলিং পাহাড়ের নামটা ভুলে যায়। অজয় বলেছেন, ‘‘আমরা দিল্লি যাচ্ছি। বিজেপিকে তো কথা রাখতে হবে। আমরা আশাবাদী। নইলে তো বিজেপির জন্য যা বলার বলে দেওয়া হয়েছে।’’
আবার গেরুয়া শিবিরের আর এক জোটসঙ্গী গোর্খা লিগের একাংশ ১১ জনজাতির তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতির দাবিতে অগস্টের শুরুতে অনশনে বসার কথা বলছে। তাঁদের কথায়. প্রতিশ্রুতি তো রক্ষার বিষয়। বহুদিন ধরেই গোর্খারা বঞ্চিত। ১১ জনজাতির বিষয়টি নিয়ে শুধু আলোচনাই চলছে। এই দাবিতে ৩ অগস্ট থেকে অনশন হবে। পাহাড়ের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে সব মিলিয়ে বিজেপি শিবির অনেকটাই বেকায়দায়।
বুধবার আবার সাংসদ রাজু বিস্তা সংসদে পাহাড়ের স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের দাবি তুলে সরব হয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পাহাড়, তরাই ও ডুয়ার্স বরাবর অনুন্নত। প্রচুর পরিমাণে কর সংগ্রহ করা হলেও এই অঞ্চলের ঠিকঠাক বিকাশ হয়নি। সেখান থেকেই গোর্খাল্যান্ডের দাবি উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে এর দ্রুত প্রতিকার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের মধ্যে দিয়ে করতে হবে। রাজ্য সরকারের ভ্রান্ত নীতির জন্য এলাকায় সমস্যা বাড়ছে।
যা শুনে পাহাড়ের মোর্চা নেতারা জানিয়েছেন, এক তো রাজু বিস্তা অধিকাংশ দাবি সংসদের জিরো আওয়ারে করে থাকেন। এ দিন করেছেন রুল ৩৭৭ অধীনে। যা সংসদ বিষয়ক মন্ত্রক দেখাশোনা করে। সরকারের কাজকর্মের সঙ্গে এর সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। আর উনি দলের নেতাদের কেন দাবির কথা বলেন না তা বোঝা যায় না। আসলে পুরোটাই বিজেপির এক গেমপ্ল্যান। পাহাড়ে দাবি-দাওয়া উঠলেও রাজু বিস্তা, জন বার্লার মতো লোকেদের সক্রিয় করে দেওয়া হয়। এই নিয়ে দার্জিলিঙের সাংসদ বহুবার সংসদে দাঁড়িয়ে ওই দাবির কথা বলে বাড়ি এসে গিয়েছেন। মোর্চা নেতাদের বক্তব্য, এ বার জিএনএলএফ কী করে দেখবেন তাঁরা।
পাহাড়ের রাজনৈতিক মহল মনে করছে, প্রায় দিনই বিমল গুরুং, অনীত থাপারা বিজেপির বিরুদ্ধে নতুন করে আঙুল তোলা শুরু করেছেন। বিজেপির ব্যর্থতা, স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধান, ১১ জনজাতির তফসিলির স্বীকৃতির কথা বিভিন্ন দলীয় বৈঠকে সামনে আনা শুরু করেছেন। এতে বিজেপির থেকে বেশি জিএনএলএফ সমস্যায় পড়ছে। তাই তাঁরা দিল্লি গিয়ে কিছু করতে দেখাতে চাইছে। আদতে পুরোটাই শুধু যাওয়া-আসা, নাকি কাজের, তা সময় বলবে।