প্রতীকী ছবি।
অভাবী ধান বিক্রি রুখতে মালদহ জেলায় অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগমের (ইসিএসসি) মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান কিনবে স্বনির্ভর গোষ্ঠী সমূহের ২৩টি সঙ্ঘ। চাষিদের একাংশের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত মাত্র এক দিন ১১৫.৩১ কুইন্ট্যাল ধান কিনেছে বামনগোলা ব্লকের একটি সঙ্ঘ। বাকিগুলি এখনও কেনার কাজ শুরুই করতে পারেনি।
কেন? স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘগুলি ধান কিনলেও কৃষকদের কাছে চেক বিলি করবে ইসিএসসি। কিন্তু ইসিএসসি ধান কেনার বিষয়ে এখনও সুনির্দিষ্ট সমস্ত সঙ্ঘকে সম্মতি দেয়নি বলে অভিযোগ। তার জেরে প্রস্তুতি নিয়েও ধান কিনতে পারছে না সঙ্ঘগুলি। তাই ধান কেনার বিষয়ে জানতে এক বার ইসিএসসি, কখনও জেলা গ্রামোন্নয়ন সেল-এ ঘুরছেন সঙ্ঘগুলির সদস্যরা।
ইসিএসসির বক্তব্য, তাদের কাছে ‘চেক রাইটার’ নেই। চেক রাইটার চেয়ে তারা জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলে চিঠি দিয়েছিল। কিন্তু এখনও তা মেলেনি। ‘চেক রাইটার’ নিয়োগ করে আগামী সপ্তাহে তারা সঙ্ঘগুলির মাধ্যমে ধান কেনা শুরু করতে পারে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ জেলায় এ বছর দু’লক্ষ ২০ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে খাদ্য দফতর ২১টি ‘ক্রপ পারচেজ সেন্টারের’ মাধ্যমে ১ লক্ষ ৪০ হাজার মেট্রিক টন, বেনফেড ৫০ হাজার মেট্রিক টন ও অত্যাবশ্যকীয় পণ্য নিগম বা ইসিএসসি ৩০ হাজার মেট্রিক টন ধান কিনবে। ইসিএসসি এই ধান কিনবে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘ ও সমবায় সংস্থাগুলির মাধ্যমে।
প্রশাসনের তরফে জানা গিয়েছে, সমবায় সংস্থাগুলির মাধ্যমে ইতিমধ্যে জেলায় ধান কেনা শুরু করেছে ইসিএসসি। কিন্তু স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্ঘগুলির মাধ্যমে সে ভাবে ধান কেনা শুরু করতে পারেনি তারা। ২ জানুয়ারি বামনগোলা ব্লকের অগ্রগতি মহিলা সঙ্ঘ সমবায় সমিতি ইসিএসসির মাধ্যমে ডাকাতপুকুর মাঠে শিবির করে ১১৫.৩১ কুইন্ট্যাল ধান কেনে। কিন্তু সঙ্ঘের মাধ্যমে আর ধান কেনা হয়নি।
সহায়ক মূল্যে ধান কেনার জন্য জেলার ২৩টি সঙ্ঘকে নির্বাচিত করা হয়েছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। কবে থেকে তাঁরা ধান কিনতে পারবেন, তা জানতে কয়েকটি সঙ্ঘের সদস্যরা কেউ ইসিএসসি দফতর বা কেউ জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের আধিকারিকদের কাছে ঘুরছেন।
গাজলের একটি সঙ্ঘের সভানেত্রী বলেন, ‘‘ইসিএসসির মাধ্যমে আমাদের সহায়ক মূল্যে ধান কেনার কথা। প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। কিন্তু ইসিএসসি এখনও কিছু না জানানোয় ধান কিনতে পারছি না।’’
জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের একটি সূত্রে খবর, সঙ্ঘগুলিকে দিয়ে ধান কেনার বিষয়ে ইতিমধ্যে ইসিএসসি ও সংশ্লিষ্ট সঙ্ঘগুলির সদস্যদের নিয়ে দু’বার জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের সভাকক্ষে বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু ধান কেনার ব্যাপারে ইসিএসসি-র সঙ্গে মাত্র ৬টি সঙ্ঘের চুক্তি হয়েছে। বাকিগুলির সঙ্গে হয়নি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র একটি সঙ্ঘকে দিয়ে সামান্য ধান কেনানো হয়েছে।
ইসিএসসি-র মালদহ জেলার ম্যানেজার মাহিদুর রহমান বলেন, ‘‘ধান কেনা হবে চেকের মাধ্যমে। কিন্তু আমাদের দফতরে চেক রাইটার নেই। জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলে আমরা চেক রাইটার চেয়ে চিঠি দিয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি। বিজ্ঞাপন দিয়ে অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের মধ্যে থেকে ছ’জন চেক রাইটার নিয়োগ করা হবে। ১৬ জানুয়ারি সেই নিয়োগের ইন্টারভিউ রয়েছে। সেই প্রক্রিয়া শেষ হলেই আগামী সপ্তাহ থেকে সঙ্ঘগুলির মাধ্যমে ধান কেনা সম্ভব হবে।’’