Cooch Behar Medical College

‘হুমকি সংস্কৃতি’ মেডিক্যালে, অভিযোগ ১৫ জনের নামে

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:৪৬
Share:

উত্তরবঙ্গ, মালদহ, রায়গঞ্জের মতো এ বার ‘হুমকি সংস্কৃতির’ (থ্রেট কালচার) বিরুদ্ধে সরব কোচবিহার মেডিক্যাল কলেজ। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, ‘কথা শুনে না চললে প্রভাব পড়বে পরীক্ষায়’— দেওয়া হত এমন হুমকি। কেউ প্রতিবাদ করার চেষ্টা করলে, ছাত্রাবাস থেকে বার করে দেওয়ারও চেষ্টা হত বলে অভিযোগ। বলা হত— “কোথাও কিছু জানিয়ে লাভ হবে না। আমরা যা বলব, সেটাই শেষ কথা।” আর তার জেরে কার্যত ভয়ে থাকতেন কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের পড়ুয়ারা। সোমবার সেই ছাত্রছাত্রীরা ‘হুমকি সংস্কৃতি’ বন্ধ করতে কড়া পদক্ষেপের দাবি তুলে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন। অধ্যক্ষের কাছে লিখিত ভাবে পনেরো জনের বিরুদ্ধে তাঁরা নালিশ জানিয়েছেন। যাদের মধ্যে কয়েক জন বহিরাগতেরও নাম রয়েছে।

Advertisement

অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, “পনেরো জন সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নানা ভাবে ভয় দেখাতেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনা যাতে আর কখনও মেডিক্যাল কলেজে না ঘটে, সে কথা মাথায় রেখে পদক্ষেপ করা হবে।” তিনি জানিয়েছেন, ২৫ সেপ্টেম্বর কলেজ কাউন্সিলের বৈঠক ডাকা হয়েছে। সে বৈঠকে ওই বিষয়ে আলোচনার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর ধরে এই ‘হুমকি-সংস্কৃতি’ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে যা নিয়ন্ত্রণ করত বহিরাগতেরা। অভিযোগ, এক জন বিএমওএইচ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। তাঁর ‘নিয়ন্ত্রণে’ ছিলেন বেশ কয়েক জন ছাত্র। বিএমওএইচের ‘মাথার উপরে’ ছিলেন কোচবিহার জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক, যাঁকে নিয়ন্ত্রণ করতেন স্বাস্থ্য দফতরের ‘উত্তরবঙ্গ লবি’র দুই নেতা বিরুপাক্ষ বিশ্বাস এবং অভীক দে। ওই বিএমওএইচের সঙ্গে বিরূপাক্ষের ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। শুধু তা-ই নয়, মেডিক্যাল কলেজের ওই ‘লবিরই’ এক ছাত্র নীলবাতি লাগানো গাড়ি নিয়ে ঘোরাফেরা করেন বলে অভিযোগ। কয়েক জন ছাত্রকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।

Advertisement

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক মেডিক্যালের এক পড়ুয়া বলেন, “কার্যত কলেজ প্রশাসনের ভূমিকা পালন করতেন ওই কয়েক জন ছাত্রই। আর জি করের ঘটনার পর থেকে তাঁরা নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। তাই অভিযোগ করা সম্ভব হচ্ছে।” ছাত্রছাত্রীদের কয়েক জন বলেন, “এত দিন বলার মতো পরিবেশ ছিল না। আমরা কিছু বললে বিপদের মুখে ঠেলে দেওয়ার চেষ্টা হত। তাই চুপ করে থাকতে হয়েছিল।” একটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ইন্টার্নদের ডিউটি বণ্টনের ক্ষেত্রে পক্ষপাতের অভিযোগও উঠেছে। এরই মধ্যে এ দিন জুনিয়র চিকিৎসকেরা কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে কাজে যোগ দিয়েছেন। মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের ‘এমএসভিপি’ সৌরদীপ রায় বলেন, “পঞ্চাশ জন জুনিয়র চিকিৎসক কাজে যোগ দিয়েছেন। আর কোনও সমস্যা রইল না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement