আক্রান্ত: চিকিৎসাধীন মধুমিতা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
এক বধূকে খুনের চেষ্টার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার ও কঠোর শাস্তির দাবিতে উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হলেন নির্যাতিতার বাপের বাড়ির লোকেরা। ওই বধূর চিকিৎসার জন্য পুলিশ সুপারের কাছে সাহায্যও চেয়েছে ডালখোলা থানার বীরপল্লি এলাকার ওই পরিবারটি।
ওই বধূর নাম মধুমিতা ঘোষ। বছর ঊনিশের মধুমিতা ২৬ নভেম্বর থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন। ২৫ নভেম্বর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করেছে এমন অভিযোগ বধূর পরিবারের। মধুমিতা মা স্বপ্না ঘোষের অভিযোগের ভিত্তিতে নির্যাতিতার স্বামী শুভ বিশ্বাস ও ভাসুর অভিষেক বিশ্বাস গ্রেফতার হলেও শাশুড়ি পলাতক। প্রত্যেকেরই বাড়ি ডালখোলা থানার লোকনাথ পাড়া এলাকায়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন ও খুনের চেষ্টার অভিযোগে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
দীর্ঘ দিনের সম্পর্কের পরে এই বছরের ২৩ জানুয়ারি শুভ মধুমিতাকে বিয়ে করেন। এ দিন মধুমিতার দিদি মৌমিতা ও মামা মলয় পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন, শুভর বাড়ির লোকজন এই বিয়ে মেনে নিতে পারেনি। ফলে বিয়ের পর থেকেই মধুমিতা ও শুভ ডালখোলার বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতেন। কিন্তু তাতেও রেহাই মেলেনি। বিয়ের পর থেকেই শুভর বাড়ির লোক ৫০ হাজার টাকা চেয়ে মধুমিতাকে নিয়মিত মারধর করতেন বলে অভিযোগ। এর জেরে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির বাকিদের সঙ্গে মধুমিতার ঝামেলা ছিল। ২৫ নভেম্বর সেই বিরোধ চরমে উঠলে অভিযুক্তরা মধুমিতাকে মারধর করে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করেন বলে তাঁর পরিবারের দাবি। মৌমিতা জানান, ‘‘কোমায় আচ্ছন্ন বোনকে চিকিত্সকেরা কলকাতার কোনও হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের সেই সামর্থ্য নেই। পুলিশ সুপারের সহযোগিতা চেয়েছি।’’
নির্যাতিতার মামা মলয়ের দাবি, ‘‘ভবিষ্যতে যাতে অন্য কোনও বধূর মধুমিতার মতো পরিণতি না হয়, তারজন্য পুলিশ সুপারের কাছে অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছি।’’ যদিও মারধরের সব অভিযোগই অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত শুভ ও অভিষেক। পুলিশের কাছে তাঁরা দাবি করেছেন, তাঁদেরকে বিনা দোষে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মানসিক কোনও কারণে মধুমিতা ওইদিন গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন বলে ধৃতদের দাবি।