দাবি: আবাস যোজনার কাজে লাগানোর প্রতিবাদে জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিলেন আশা কর্মীরা। শুক্রবার ইংরেজবাজারে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত তৃণমূল বা বিজেপি, যারই হোক না কেন মালদহে ‘আবাস প্লাস’ যোজনার সমীক্ষা করতে গিয়ে বেশির ভাগ পঞ্চায়েতেই কম-বেশি হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের। এই পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার অভাব বোধ করে এই সমীক্ষার কাজ করতে চাইছেন না আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অধিকাংশ। তবে জেলা তৃণমূল ও বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, প্রকৃত উপভোক্তাদেরই যাতে ‘আবাস প্লাস’ যোজনায় ঘর মেলে তা প্রশাসন নিশ্চিত করুক।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা প্রকল্পে ‘আবাস প্লাস’ উপভোক্তাদের যাচাইয়ের কাজ মালদহ জেলায় শুরু হতেই মানিকচক, রতুয়া, চাঁচল, হরিশ্চন্দ্রপুর, হবিবপুরের মতো ব্লকগুলিতে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা কম-বেশি শাসানি ও হুমকির মুখে পড়ছেন বলে অভিযোগ। বিজেপি অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতেই সমীক্ষার কাজে গিয়ে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। যদিও শাসক দলের পাল্টা অভিযোগ, বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতগুলিতেও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে দু’দলের মধ্যে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে ঘটছে কী? হবিবপুর ব্লকের বিজেপি পরিচালিত বৈদ্যপুর পঞ্চায়েতের একটি সংসদে সমীক্ষায় গিয়েছিলেন দু’জন আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই আশা কর্মী বলেন, ‘‘যে উপভোক্তার নাম তালিকায় রয়েছে, তাঁর পাকা বাড়িও যেমন আছে, তেমনই কাঁচা ঘরও আছে। ওই উপভোক্তা কাঁচা ঘরটিকেই দেখিয়ে ছবি না তুললে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন।’’ একই অভিযোগ বিজেপি পরিচালিত মানিকচক, ধূমপুর, মঙ্গলপুরা-সহ একাধিক পঞ্চায়েতে।
পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের মালদহ জেলা সম্পাদিকা মেহবুবা খাতুন বলেন, ‘‘আমরা তৃণমূল, বিজেপি বুঝি না। প্রতিটি পঞ্চায়েতেই আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কম বা বেশি শাসানির মুখে পড়তে হচ্ছে। আমরা জেলা প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এই কাজ থেকে অব্যাহতি চেয়েছি।’’
বিজেপির উত্তর মালদহ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত অভিযোগ করেন, ‘‘আসলে আবাস প্লাস তালিকায় যে সমস্ত মানুষের নাম রয়েছে তাদের কাছ থেকে তৃণমূলের লোকজন আগে থেকেই টাকা নিয়ে বসে আছে। ফলে, শাসকদলের দখলে থাকা পঞ্চায়েতগুলিতে আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা সমীক্ষা করতে গিয়ে হুমকির মুখে পড়ছেন। আমরা চাই, প্রকৃত উপভোক্তা ঘর পাক এবং প্রশাসন তা নিশ্চিত করুক।’’
যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সীর পালটা অভিযোগ, ‘‘বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েতে আশাকর্মীদের শাসানি শুনতে হচ্ছে।’’ পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘‘আমরা চাই সমীক্ষা যথাযথ ভাবে হোক এবং দুর্নীতি থাকলে, প্রশাসন ব্যবস্থা নিক। সমীক্ষায় যাতে বাধা না আসে, সে দিকটিও আমরা ব্লকের দলীয় নেতাদের নজরে রাখতে বলেছি।’’