ডিবিসি রোডে এই পার্টি অফিস ঘিরেই বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র sandipabp4@gmail.com
পুরসভার অনুমোদন না থাকায়, পুরনো অফিস ভাঙার পরেও জলপাইগুড়িতে বহুতল পার্টি অফিস নির্মাণ করতে পারেনি বিজেপি। চার বছর আগের কথা। এ বার লোকসভা ভোটের মুখে, জলপাইগুড়ির ডিবিসি রোডের জেলা পার্টি অফিসের সেই ‘বিতর্কিত’ জায়গায় পাকা বাড়ি নির্মাণ শুরু করেছে বিজেপি। অভিযোগ, সীমানা পাঁচিলের লোহার ফটক বন্ধ করে বাইরে পলিথিন টাঙিয়ে আড়াল করে শুরু হয়েছে ‘অনুমোদনহীন’ নির্মাণ। ব্যস্ত রাস্তার পাশে বিজেপি পার্টি অফিসে ‘এমন’ নির্মাণ চলায় বেধেছে বিতর্ক। জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রধান তৃণমূলের পাপিয়া পাল বলেন, "পুরসভার অনুমোদন ছাড়া, নির্মাণ বেআইনি। প্রয়োজনে, নির্মাণ আটকানো হবে।"
পুর আইন অনুযায়ী, পাকা নির্মাণ করতে গেলে তার অনুমোদন নিতে হয় পুরসভা থেকে। প্রস্তাবিত ভবনের বিস্তারিত তথ্য পুরসভায় জমা দিতে হয়, সেটি খতিয়ে দেখে পুরবোর্ড অনুমোদন দেয় অথবা বাতিল করে। এই নিয়মের ধার ধারেনি বিজেপি, অভিযোগ। সূত্রের খবর, দলের নেতাদের একাংশ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তড়িঘড়ি স্তম্ভ গেঁথে, দেওয়াল তুলতে হবে। সে কাজ অনেকটাই এগিয়েছে। অন্তত দোতলা বাড়ি তৈরির ভিতের কাজ শেষ। দেওয়াল গাঁথাও শুরু হয়েছে। ডিবিসি রোডের পার্টি অফিস চত্বরকে বাইরে থেকে বন্ধ করা হয়েছে, যাতে পথচলতিদের নজর এড়িয়ে যায়। গত রবিবার বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে সাংসদের কর্মকাণ্ডের প্রচার-পুস্তিকা প্রকাশ অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে অনুষ্ঠান হলে, নির্মাণের বিষয়টি জানাজানি হবে বলে হঠাৎ করে অনুষ্ঠানটি পার্টি অফিস থেকে সাংসদের বাসভবনে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে খবর বিজেপি সূত্রের।
পুরসভার অনুমতি ছাড়াই যে নির্মাণ হচ্ছে তা কার্যত মেনেছেন বিজেপি নেতারা। বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী বলেন, “পুরসভা এক বার আমাদের ভবনের নকশা অনুমোদন করেও, স্থগিত করেছে। কেন নকশা অনুমোদন করা হচ্ছে না তার জবাবও দিচ্ছে না। তবে আমরা আইন মানি, পাকা ঘর হবে কিন্তু ছাদ নয়, টিনের চাল রাখব।” ২০২০ সালে প্রথমে ভবন তৈরির অনুমোদন পাওয়ার পরে পুরনো পার্টি অফিস ভেঙেছিল বিজেপি। তার পরে, ভবনের অনুমোদন দেওয়া নিয়ে বিতর্ক হতেই রাজ্যের পুর দফতরের নির্দেশে তদন্ত হয় বিজেপি পার্টি অফিসের ভবন তৈরির অনুমোদন নিয়ে এবং তা আটকে দেওয়া হয়। সেই থেকে টিনের ঘর তৈরি করে কাজ চালাচ্ছিল বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে, সেই টিনের ঘর ভেঙে হঠাৎ অনুমতি ছাড়াই পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করা হল কেন? দলের সাংসদ জয়ন্ত রায় বলেন, “আইন ভেঙেছে পুরসভাই। আমাদের দলীয় কর্মী বসার জন্য ঘর বানানো হচ্ছে।” অন্য দিকে, জলপাইগুড়ির পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, বিজেপিকে ভবন তৈরির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হবে।