নাগরাকাটায় বীরসা মুন্ডার মূর্তির সামনে অভিষেক। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
জনসংযোগ কর্মসূচির শ’দেড়েক কিলোমিটার লম্বা পথে বন্ধ দেখেননি বলে শুক্রবার দাবি করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কালিয়াগঞ্জ-কাণ্ড নিয়ে বিজেপির ডাকা ১২ ঘণ্টার বাংলা বন্ধের দিন অভিষেকের কর্মসূচি ঘিরে বাড়তি চাপ ছিল জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল নেতাদের কাছে। দিনের শেষে অভিষেক মন্তব্য করেছেন, “এই এতটা পথ পেরিয়ে এলাম। চারপাশে প্রচুর ভিড়। কোথাও কোনও বন্ধ দেখলাম না।” সেই মন্তব্য শুনে আশ্বস্ত হয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতারা। তবে অভিষেকের যাত্রাপথের বাইরে জলপাইগুড়ি, ময়নাগুড়িএবং ধূপগুড়িতে জনজীবন আংশিক ব্যাহত হয়েছে।
গয়েরকাটা থেকে এ দিন অভিষেক চলে যান নাগরাকাটায়। সেখানে বীরসা মুন্ডার মূর্তিতে মালা দিয়ে পাশের স্কুল মাঠে সভা করেছেন। নাগরাকাটা থেকে যখন চালসার দিকে অভিষেকের কর্মসূচি ছুটছে তখন দু’দিকের রাস্তায় লোকজন দাঁড়িয়ে ছিল, স্বাভাবিক চেহারায় দেখা গিয়েছে গ্রামের হাট-বাজার। নাগরাকাটার পরে অভিষেকের সভা ছিল চালসা মোড়ে। সেখান থেকে ওদলাবাড়িতে সভা সেরে ক্রান্তিতে অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন। ক্রান্তিতে সকাল থেকেই বনধের কোনও রেশ দেখা যায়নি। দোকান-বাজার খোলা ছিল। স্বাভাবিক ভাবেই বাজারে ভিড় ছিল। অভিষেক নাগরাকাটা, চালসা, মেটেলির চা বলয়ের রাস্তা দিয়ে গিয়েছেন। চা বাগানেও অন্য দিনের মতো স্বাভাবিক কাজ হয়েছে। এ দিন দুপুরে বিজেপির জেলা পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠকের সময়ে বিজেপি নেতারা স্পষ্ট করে বলতেই পারেননি চা বাগান বন্ধের আওতার বাইরে কি না।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী অভিযোগ করেছেন, “অভিষেকের যাত্রাপথে দোকানবাজার পুলিশ ও তৃণমূল জোর করে খুলিয়েছে। এ দিন মানুষ নিজেরাই রাস্তায় বেরোননি। বন্ধ সফল হয়েছে।” যদিও তৃণমূলের জেলা সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, “মানুষই বন্ধ ব্যর্থ করেছে। এ দিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় আসার জন্য সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমেছেন। বিজেপি অনেক চেষ্টা করেছিল, কিন্তু বন্ধ করতে পারেনি।’’
চালসা, ওদলাবাড়ি, ক্রান্তিতে এ দিন অভিষেকের সভা, কর্মসূচিতে ভিড়ও হয়েছিল চোখে পড়ার মতো। সভাস্থলের আশেপাশে খাবারের দোকান বসে গিয়েছিল। কিছুজায়গায় কাঁচের জিনিস থেকে হরেক মালের দোকানও বসে যায়। মেঘলা দুপুরে সেখানে প্রায় মেলার চেহারা। উত্তরবঙ্গে বন্ধ ডাকা হয়েছে, তা অন্তত জনসংযোগ কর্মসূচির ওই এলাকাগুলিতে মালুম পড়েনি।