বিশ্বকর্মা পুজোয় শামিল আসগর আলি, বাবলু সরকার। নিজস্ব চিত্র
রমজান মাসে রোজা রাখেন তাঁরা। বিশ্বকর্মা পুজোয় আবার বাবলু, বিকাশদের পাশে বসে অঞ্জলিও দেন মহম্মদ ইলিয়াস, আসগর আলিরা। শনিবার দুপুরে বিশ্বকর্মা পুজোয় সম্প্রীতির এমনই ছবি দেখা গেল মালদহের ইংরেজবাজার শহরের একটি বিউটি পার্লারে। তাঁদের দাবি, বছরের পর বছর একসঙ্গে কাজ করছি। তাই, ইদের মতো বিশ্বকর্মা পুজোতেও একসঙ্গে সবাই আনন্দ করি।
ইংরেজবাজার শহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পিরোজপুর এলাকায় প্রায় ২০ বছর ধরে ছেলেদের বিউটি পার্লার চালাচ্ছেন নালাগোলার বাবলু সরকার ও শহরের কৃষ্ণপল্লি এলাকার বাসিন্দা আসগর আলি। প্রথম দিকে, দু’জনে মিলেই পার্লারটি চালাতেন। পরে যোগ দেন শহরেরই বাসিন্দা মহম্মদ ইলিয়াস, পুরাতন মালদহের বিকাশ দাস, মহম্মদ সাদ্দাম আনসারি। এক সঙ্গে কাজ করার পাশাপাশি বিশ্বকর্মা পুজোতেও শামিল হয়েছেন তাঁরা।
শুক্রবার রাতেই বাজার থেকে বিকাশের সঙ্গে গিয়ে বিশ্বকর্মা মূর্তি, ফল, ফুলের বাজার করে নিয়ে আসেন ইলিয়াস, সাদ্দাম। এ দিন সকালে পুজোর জোগাড়ে বাবলু, শম্পি সরকারকে সহযোগিতা করেন আসগর। দুপুরে পুজো শুরু হলে তাঁদের পাশে বসেই অঞ্জলি দেন আসগর, সাদ্দামরা। আসগর বলেন, “কর্মই আমাদের কাছে প্রকৃত ধর্ম। প্রায় ২০ বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করছি। পার্লারে আমরা ইফতার পার্টি, ইদও করি। আর কর্মের দেবতা বিশ্বকর্মার পুজোও করি।” বাবলু বলেন, “ধর্ম নিয়ে আমাদের মাথাব্যথা নেই। কর্মের দেবতা বিশ্বকর্মার কাছে প্রার্থনা করি যাতে আসগরদের নিয়ে আরও বহু বছর একসঙ্গে কাজ করে যেতে পারি।”
শুধু পিরোজপুরের এই পার্লারেই নয়, বিশ্বকর্মা পুজোর সম্প্রীতির ছবি দেখা গিয়েছে শহর বা গ্রামের গ্যারেজ, সোনার দোকানেও। এ দিন মালদহের সেচ দফতরের পুজোয় শামিল হন রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনও। তিনি বলেন, “গোটা বাংলার মতো মালদহেও কোনও ভেদাভেদ নেই। ইদ, পুজো, যে কোনও উৎসবেই সব ধর্মের মানুষ শামিল হন। সম্প্রীতির এমন ছবি জেলায় অটুট থাকুক।”