দরজা খুলল না: বৃহস্পতিবার থেকে খোলার কথা থাকলেও, তালা ঝোলানো প্রদর্শনী কেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।
এক শহরে প্রথম শো-তে হাজির ২৩ জন দর্শক, দ্বিতীয় শো-তে মাত্র ৪ জন। আর এক শহরে পুরনো ছবিতে দর্শক হবে না, এই ভয়ে দরজা খুলল না মাল্টিপ্লেক্সের।
সিনেমা হল চালু হওয়ার প্রথম দিনে যথাক্রমে জলপাইগুড়ি ও শিলিগুড়ির ছবি ছিল এটাই।
করোনা আবহে এত দিন বন্ধ ছিল সব হল। সম্প্রতি প্রেক্ষাগৃহ খুলতে সবুজ সঙ্কেত দেয় সরকার। এ দিন জলপাইগুড়ি শহরের পান্ডাপাড়ার একটি হল খোলে। এখানে মোট দর্শক আসন ১৩৭৪ টি। প্রথম শোতে হাজির মাত্র ২৩ জন দর্শক । দ্বিতীয় শোতে দর্শক মাত্র ৪ জন। প্রথম দিন হলে দর্শক টানতে সুশান্ত সিংহ রাজপুতের ‘কেদারনাথ’ দিয়ে শুরু করেছিলেন হল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। যদিও তিনটি করে শো চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে হল পরিচালন সমিতি। দর্শক না হওয়ায় হতাশ তাঁরা। শহরের অন্যান্য আরও তিনটি সিনেমা হল এখনও চালু হয়নি। কবে চালু হবে, এখনও সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট হল পরিচালন সমিতি কিছু জানাতে পারেনি।
হলে আসা বেরুবাড়ির ববিতা রায় বলেন, ‘‘হল খুলবে জানা ছিল না। প্রাইভেট পড়তে এসেছিলাম। হল খোলা দেখে কয়েক জন এলাম। একদমই ফাঁকা হল।’’ শহরের রায়কত পাড়ার সঞ্জয় সাহা বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন পরে হল খুলেছে। তবে এই সিনেমা আগেই দেখেছি। তবুও আজ আবার দেখলাম।’’
হলের পরিচালন সমিতির দাবি, জীবাণুনাশক ছড়ানো হয়েছে গোটা হলে। সকলকে মাস্ক পরেই হলে ঢোকার কথাও জানানো হয়েছে। তবে দর্শক না হলে তিনটে শো চালানো অসম্ভব। বিদ্যুতের খরচও উঠবে না বলে দাবি হল পরিচালন সমিতির। হলের পরিচালক প্রসেনজিৎ সাহা বলেন, ‘‘দর্শক না হলে শুক্রবার থেকে শুধুমাত্র একটি করেই শো চালানো হবে।’’
শিলিগুড়িতে আবার পুরনো ছবি দেখানো হলে দর্শক আসবে কিনা, এই প্রশ্নে হলই খুলল না এ দিন। সিটি সেন্টারের একটি মাল্টিপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ জানান, এতদিন হল বন্ধ থাকার ফলে অনেক লোকসান হয়েছে। এই পরিস্থিতে পুরনো সিনেমা চালালে দর্শক যাবেন না বলে দাবি। তবে বিধি মেনে পুজোর আগে হল খোলার অনুমতি ইতিবাচক বলে মনে করছে তারা। এ দিন হল খোলার কথা, অথচ শিলিগুড়িতে দেখা যায় এ দিনই যেন নড়েচড়ে বসেন হল কর্তৃপক্ষ। মাল্টিপ্লেক্সগুলিতে জীবাণুনাশক ছড়ানো থেকে সব ঝাড়পোঁচের কাজ এ দিনই হয়েছে।
শিলিগুড়ি দার্জিলিং মোড়ের পাশের একটি মাল্টিপ্লেক্সের ম্যানেজার রাহুল লাহিড়ি বলেন, ‘‘পুজোর আগে হল খোলার অনুমতিতে কর্মীদের অনেকে আশা দেখছেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সিনেমা রিলিজও করতে হত।’’ হিলকার্ট রোডের মাল্লাগুড়ি এলাকার একটি সিনেমা হলের ম্যানেজার নিখিল সেন বলেন, ‘‘কোন ছবি চালাব, সেটাই খুঁজে পাচ্ছি না। আগামী সপ্তাহ থেকে হল খুলবে।’’ ডিআইফান্ড মার্কেটের পাশের একটি সিনেমা হলের ম্যানেজার সূজন দে বলেন, ‘‘স্বাভাবিক পরিস্থিতে নতুন সিনেমাতেও আর্ধেক দর্শক নিয়ে হল চালাতে হত। আর এই পরিস্থিতে পুরনো সিনেমা দেখার দর্শক খুজে পাওয়া যাবে না।’’