রাত দেড়টায় করিডরে সাপ

কিন্তু বিপদের সময়ে হাতের কাছে কিছু মেলে না। সুভাষের ফোন নম্বরও খুঁজে পাওয়া গেল না। অগত্যা গাড়ি পাঠানো হল রাঙাপানিতে তাঁর বাড়িতে। রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়। তিনি সাপটিকে ধরে বস্তাবন্দি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০২:৪৮
Share:

হাসপাতালে হঠাৎ গোখরো। নিজস্ব চিত্র।

রাত তখন দেড়টা। পুরুষ মেডিসিন বিভাগ থেকে মহিলা মেডিসিন বিভাগে যাওয়ার করিডরে হঠাৎ চোখ পড়তেই পিলে চমকে ওঠে নিরাপত্তারক্ষীর। কিছুটা দূরেই ফণা তুলে দাঁড়িয়ে বাছাধন। করিডর ধরে সেটি পুরুষ মেডিসিন বিভাগের দিকেই আসছিল। শনিবার রাতে তাকে দেখেই আতঙ্ক ছড়াল উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।

Advertisement

সেই সময় মহিলা মেডিসিন বিভাগ থেকে করিডর দিয়ে হেঁটে আসছিলেন রোগীর আত্মীয়া এক মহিলা। তিনিও সাপ দেখে থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। সাপটিকে কী ভাবে তাড়ানো বা ধরা হবে, বুঝতে পারছিলেন না নিরাপত্তারক্ষীরা। কয়েক জন প্লাস্টিকের ড্রাম গড়িয়ে দেন সাপটির দিকে। কিন্তু সাপবাবাজি তাতে ঢুকতে চাননি। অনেক ঘাম ঝরানোর পরে শেষে তাঁরা রণেভঙ্গ দিয়ে সাপ বিশেষজ্ঞ, রাঙাপানির বাসিন্দা সুভাষ তালুকদারকে ডাকার সিদ্ধান্ত নেন।

কিন্তু বিপদের সময়ে হাতের কাছে কিছু মেলে না। সুভাষের ফোন নম্বরও খুঁজে পাওয়া গেল না। অগত্যা গাড়ি পাঠানো হল রাঙাপানিতে তাঁর বাড়িতে। রাত আড়াইটে নাগাদ তাঁকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয়। তিনি সাপটিকে ধরে বস্তাবন্দি করেন। রবিবার দুপুরে বন দফতরকে জানিয়ে সেটি পানিঘাটা জঙ্গলে ছেড়ে দেন।

Advertisement

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতাল চত্বরে ঝোপজঙ্গল পরিষ্কার করা হচ্ছে। তা ছাড়া মাঝেমাঝেই বৃষ্টি হচ্ছে বলেই হয়তো সাপটি করিডরে উঠে এসেছে। হাসপাতালের কর্মী, নিরাপত্তারক্ষীদের কয়েক জন জানান, করিডরে যেখানে সাপটি ছিল, অনেক সময় ওয়ার্ডে জায়গা না হলে রোগীরা ওই করিডরেও থাকেন। তা ছাড়া নজরে না পড়লে সাপটি ওয়ার্ডে ঢুকে যেতে পারত।

এর আগেও উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের চত্বরে গোখরো অনেক বারই দেখা গিয়েছে। সপ্তাহখানেক আগেও ছাত্রীদের হস্টেলের তিনতলায় শৌচাগারের পাইপের ভিতর থেকে একটি সাপ বেরিয়েছিল। সুভাষবাবুও সেটিকে ধরতে পারেননি। সেটি পাইপ বেয়ে নেমে গিয়েছে বলেই জানান তিনি। অধ্যক্ষের দফতরের উল্টো দিকে পূর্ত দফতরের বিদ্যুৎ বিভাগের অফিসে কয়েক বছর আগে টেবিলের উপরে গোখরো উঠে বসেছিল। মাস দেড়েক আগে লেবার ওয়ার্ডে অটোক্লেভ যন্ত্রের ঘরে সাপ ঢুকেছিল।

মণিকা বর্মন, বিজলী রায়দের মতো রোগীর আত্মীয়েরা জানান, ওয়ার্ডের আশেপাশে যাতে সাপ না থাকে সে জন্য কর্তৃপক্ষের উচিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। সুপার মৈত্রেয়ী কর ছুটিতে রয়েছেন। দায়িত্বে রয়েছেন মৃদুময় দাস। তিনি বলেন, ‘‘সকলকেই সাবধানে থাকতে বলা হয়েছে। ব্লিচিং পাউডার, ফিনাইল আশেপাশে ছড়াতে বলা হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement