শালুগাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী।
শিলিগুড়ির উপকন্ঠে বুনো জন্তুদের সাফারি পার্ক গড়ার কাজ দ্রুততার সঙ্গে করতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৃহস্পতিবার কালিম্পং থেকে কলকাতা ফেরার পথে শালুগাড়ায় মহানন্দা অভয়ারণ্যের কোল ঘেঁষে প্রস্তাব ওই পার্কেট জায়গা ঘুরে দেখেন মুখ্যমন্ত্রীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৭০০ একর জায়গা জুড়ে ওই পার্ক তৈরি হবে। মুখ্যমন্ত্রীকে ওই জায়গা ঘুরিয়ে দেখাতে সেখানে হাজির ছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব, বনাধিকারিক এবং প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বেলা আড়াইটে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রী সেখানে পৌঁছেই উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীকে বলেন, কী কী কাজ শুরু হয়েছে তিনি দেখবেন। এর পরেই তাঁকে নিয়ে সরিয়া পার্কের ওই জায়গার একাংশ ঘুরে দেখান উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। কোথায় কী হবে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চাইলে সেগুলি তাঁকে জানানো হয়। ১০ মিনিট ঘুরে ফিরে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুরো প্রকল্পের খসড়া তৈরি হয়েছে। ২৬৫ কোটি টাকার এই প্রকল্পের জন্য একজন আধিকারিক নিয়োগ করা হয়েছে। প্রকলস্প গড়তে কেন্দ্রের ছাড়পত্রও মিলেছে। দেড় থেকে দুই বছরে প্রকল্পটি গড়ে তোলা হবে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হবে।” তিনি জানান, রাজ্যে এ ধরনের পার্ক এটাই প্রথম। পার্কের বানাঞ্চলে বাঘ, চিতাবাঘ, হরিণ সমস্ত থাকবে। জঙ্গলের মধ্যে পশুগুলি ছাড়া থাকবে। পর্যটকদের জন্তু দেখাতে বিশেষ বাসে করে ঘোরান হবে। তা ছাড়া হেঁটে ঘোরার জন্য আলাদা জায়গা থাকবে। সেখানে বাঘ, চিতাবাঘ থাকবে না। আলাদা ভাবে পাখিরালয় থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে সান্দাকফুকে ঘিরেও রাজ্য সরকার পরিকল্পনা নিচ্ছে। তিনি বলেন, “সান্দাকফু‘টপ অব দ্যা কুইন’ কী করে সাজিয়ে তোলা হবে তা দেখতে পরবর্তীতে সেখানে যাব। আলগাড়া থেকে উঁচুতে আরেকটি জায়গা দেখা হয়েছে। সেখানে ‘নিউ দার্জিলিং’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। জেলাশাসক আরও কিছু জায়গা চিহ্নিত করে রেখেছেন।”
শালুগাড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে স্বাগত।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, সাফারি পার্কের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর থেকেই ৩৪ লক্ষ টাকা খরচ করে প্রকল্পের ‘ডিপিআর’ তৈরি করা হয়েছে। প্রকল্পের একাংশে তৃণভূমি তৈরি হচ্ছে। সেই ঘাস আনা হচ্ছে জলদাপাড়া থেকে। জঙ্গল ঘেরা তৃণভূমিতে বাইসন, গণ্ডার, হরিণের দেখা মিলবে। প্রকল্পের এলাকায় ৬ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা হবে পাখিরালয়। থাকবে কাফেটেরিয়া। গৌতমবাবু বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীও চাইছেন এই স্বপ্নের প্রকল্পের কাজ দ্রততার সঙ্গে এগিয়ে নিতে। প্রকল্পটি চালু হলে অনেকের কর্ম সংস্থানও হবে। শুধু রাজ্যেই নয় দেশের মধ্যে এই সাফারি পার্ক নজির তৈরি করবে।” ইতিমধ্যেই ‘নন টিম্বার ফরেস্ট প্রডাক্ট ডিভিশন’-এর ডিএফও অরুণ মুখোপাধ্যায়কে প্রস্তাবিত ওই পার্ক ‘নর্থবেঙ্গল ওয়াইল্ড অ্যানিম্যাল পার্ক’-এর ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্ব দিয়ে দ্রুততার সঙ্গে কাজ এগোতে বলা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ৭৮ কোটি টাকা বরাদ্দ মিলেছে। সাফারি পার্কের বিস্তীর্ণ এলাকার মধ্যে পড়বে গুলমাখোলা নদী। থাকবে ছোট বড় আরও অন্তত ১৫ টি ঝোরা।
বৃহস্পতিবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।