মমতার হাত ধরে কলেজে ভর্তি মৃদুস্পর্ণা

অপরিচিত পাহাড়ি পথ ব্রিচহিল রোডে মা’র সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার সময় সামনে সাদা শাড়ি পড়া এক মহিলাকে এগিয়ে আসতে দেখেছিলেন ১৯ বছরের মৃদুস্পর্ণা। মহিলার সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছু লোকজন। ‘বড় কেউ’ ভেবে সাহস করে এগিয়ে যান অসমের নওগাঁও মিলনপুরের তরুণী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৬ ০২:৫৪
Share:

মৃদুস্পর্ণা

অপরিচিত পাহাড়ি পথ ব্রিচহিল রোডে মা’র সঙ্গে হেঁটে যাওয়ার সময় সামনে সাদা শাড়ি পড়া এক মহিলাকে এগিয়ে আসতে দেখেছিলেন ১৯ বছরের মৃদুস্পর্ণা। মহিলার সঙ্গে ছিলেন বেশ কিছু লোকজন। ‘বড় কেউ’ ভেবে সাহস করে এগিয়ে যান অসমের নওগাঁও মিলনপুরের তরুণী। সঙ্গে থাকা এক ভদ্রলোক বাধা দিলেও ওই তরুণী সোজা এগিয়ে গিয়ে বলেন, ‘অান্টি, গর্ভমেন্ট কলেজটা কোন দিকে?’

Advertisement

‘অান্টি’ দেরি না করে দেখিয়ে দেন পথ। দু’এক টুকরো কথোপকথনও হয়। অসম থেকে ভর্তি হতে এসেছে বলে কলেজের দিকে এগিয়ে যান মৃদুস্পর্ণা। তখনও তিনি জানতেনই না, সাধারণ সাদা শাড়ি পড়নে মহিলার নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত বৃহস্পতিবার, ১৪ জুলাই-এর ঘটনা। পাহাড়ে গেলে রিচমন্ড হিলের নিচের ওই রাস্তায় মুখ্যমন্ত্রী হাঁটতে বার হন।

প্রথম ধাক্কায় ব্যর্থ হয়েই ফিরতে হয়েছিল কলেজ থেকে। কারণ ভর্তির সময়সীমা নাকি শেষ। কিন্তু ফিরে আসার পথেই বদলে যায় অসমের তরুণীর ভাগ্য। আবার দেখা মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে। মমতা নিজেই এগিয়ে খোঁজ নেন। নিচুস্বরে মৃদুস্পর্ণা জানিয়ে দেন, ভর্তি হওয়া হয়নি। শুনে আর দেরি করেননি মমতা। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবকে ভর্তির ব্যবস্থা করতে বলেন। মঙ্গলবার দার্জিলিঙের কলেজে মৃদুস্পর্ণার ভর্তির প্রক্রিয়া শেষ হল। সে দিন ব্রিচহিলের রাস্তায় দাঁড়িয়েই বাবার কাছে তরুণী জানতে পারেন, আন্টির আসল পরিচয়।

Advertisement

গত সপ্তাহের শুরুতে বাবা স্বপন বড়ুয়া এবং মা নীলাক্ষ্মীর সঙ্গে দার্জিলিঙে এসেছেন মৃদুস্পর্ণা। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘নওগাঁতে কোনও কলেজে ভর্তি হতেই পারত। কিন্তু আমি ওঁকে বাইরে পড়াতে চাই। কলকাতা, বেঙ্গালুরুতে আর্থিক অসুবিধায় পড়াতে পারছি না। তাই দার্জিলিং গর্ভমেন্ট কলেজ। এখন হস্টেলের ব্যবস্থা হয়ে গেল খুব ভাল হয়।’’ বাড়িতে অঙ্কের প্রাইভেট টিউশন পড়িয়ে সংসার চালান স্বপনবাবু। তিনি জানান, মেয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০০ মধ্যে ৪২৮ নম্বর পেয়েছে। ইংরেজি এবং অলটারনেটিভ ইংরেজিতে ৯০ পেয়েছে। এ দিন ইতিহাসে অনার্স নিয়ে ভর্তি হয়েছে মৃদুস্পর্ণা। ‘‘মেয়ের ভর্তির সুযোগটা এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে হয়েছে, তা ভাবতেই কেমন লাগছে।’’ প্রতিক্রিয়া স্বপনবাবুর। আর মৃদুস্পর্ণার কথায়, ‘‘পুরোটাই স্বপ্নের মত।’’

গর্ভমেন্ট কলেজের অফিসার ইনচার্জ প্রাজ্জ্বল সি লামা বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে মেয়েটিকে ভর্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। ওঁর হস্টেলের বিষয়টিও দেখা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement