সিভিক ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগে উত্তাল হয়ে উঠল শিলিগুড়ির ইস্টার্ন বাইপাস। তোলা দিতে অস্বীকার করায় এক ট্রাক চালক ও খালাসীকে দুই সিভিক ভলান্টিয়ার বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টা নাগাদ এই ঘটনার জেরে প্রায় তিন ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে উত্তেজিত জনতা। ভক্তিনগর থানা ও ট্রাফিক গার্ড থেকে পুলিশবাহিনী গেলে তাদের ঘিরে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। ট্রাক চালককে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হলেও খালাসিকে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
এদিনের ঘটনায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে ওই চালক ও খালাসির বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন ভঙ্গ করার একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। মারধরের লিখিত অভিযোগ না মেলায় এই ব্যাপারে মামলা দায়ের হয়নি বলে পুলিশের দাবি। জখমদের আত্মীয়রা জানান, আলোচনা করে অভিযোগ দায়ের হবে। তবে সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা করানো নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে পুলিশেই। পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মা বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারদের দিয়ে কখনও কাগজপত্র পরীক্ষা করানো হয় না। কর্মী সংখ্যা কম থাকায় তারা শুধু ট্রাফিক পুলিশের হয়ে গাড়ি থামানোর কাজ করেন। বাকি কাজ পুলিশ অফিসাররা করেন।’’ তবে দু’একটি ক্ষেত্রে এই ভলান্টিয়ারদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে বলে তিনিও স্বীকার করেন। তেমন হলে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বা তাঁদের ‘ডিউটি অফ’ করে দেওয়া হয় বলেও তাঁর দাবি।
তবে ট্রাফিক পুলিশের ডিসি শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘কাগজপত্র পরীক্ষা করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই সিভিক ভলান্টিয়ারদের। তবে মামলা দিতে হলে সাব ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কাউকে তা করতে হবে।’’ তবে পুলিশেরই একাংশ জানাচ্ছে, এদিন ঘটনাস্থলে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারের সঙ্গে একজন সহকারী সাব ইন্সপেক্টর ছিল। ফলে কোনও দিক থেকেই পুলিশ কর্তাদের যুক্তি খাটে না বলে দাবি চালকদের।
সিভিক পুলিশদের এই ‘স্পর্ধা’র পিছনে পুলিশের একাংশের প্রত্যক্ষ মদত দেখতে পাচ্ছেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘এদের নিয়োগও করা হয়েছে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য। ফলে এঁদের সাহস প্রতিদিনই বাড়়ছে।’’ জেলা কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক অলক মিত্র বলেন, ‘‘লক-আপে পুলিশ পর্যন্ত মারধর করতে পারে না। অথচ সিভিক ভলান্টিয়ার হয়ে তারা কীভাবে মারধর করে তা খতিয়ে দেখা দরকার।’’ বিজেপির দার্জিলিং জেলা সভাপতি রথীন বসুও। তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূল কংগ্রেসের প্রত্যক্ষ মদতে এসব হচ্ছে।’’ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘ঘটনার বিষয়ে কিছুই জানি না। তবে এমন হওয়া উচিত নয়।’’