অনাথ রায়। নিজস্ব চিত্র।
জীবনের ৩০টা বছর কেটেছে মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে। আজ নিজের মুখের হাসিই হারিয়ে ফেলেছেন ধূপগুড়ির কৌতুকশিল্পী অনাথ রায়।
সার্কাসে কৌতুকাভিনেতার কাজ করেছেন প্রায় ৩০ বছর। কিন্তু, লকডাউনের ফলে গত ৭ মাস ধরে বন্ধ সার্কাস। অন্য কোনও কাজও শেখা নেই অনাথবাবুর। ফলে টান পড়েছেন রুজিরোজগারে। । তিন জনের সংসারে দু’বেলা দু’মুঠো খাবার জোগাড় করাই কঠিন হয়ে দাঁড়াচ্ছে তাঁর।
সার্কাসে কাজ করেই এক মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন অনাথবাবু। ছেলে পড়াশোনা স্নাতক স্তর পর্যন্ত। রেলের ঠিকা শ্রমিকের কাজ করেন তিনি। কিন্তু তিনিও এই কয়েক মাসে প্রায় বেকার। ফলে স্ত্রী-ছেলেকে নিয়ে তিন জনের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে অনাথবাবুর কাছে। নিজের দৈন্যদশার কথা বলতে গিয়ে এখন চোখ দিয়ে জল বেরিয়ে আসে তাঁর।
লকডাউনে চাল ছাড়া কোনও সরকারি সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ করেছেন অনাথবাবু। সার্কাস দেখাতে এক সময় নেপাল, ভুটান ছাড়াও দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সঙ্গে ঘুরেছেন। আজ তাঁর পাশে কেউ দাঁড়াননি বলেও অনুযোগ করেছেন। সার্কাস শুরুর আশায় দিন গুনছেন এখন।
অনাথবাবুর দুর্দশার কথা শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। ধূপগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশ কুমার সিংহ বলেন, “আমার কাছে আগে সমস্যার কথা জানাননি অনাথবাবু। এমনকি ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরও কিছু বলেননি। আমি খবর পাওয়ার পরেই তাঁর বাড়িতে গিয়েছি। অনাথবাবুর পরিবারকে সব রকম সহযোগিতা করা হবে। ভাতার ব্যবস্থাও করা হবে।”
পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি কাউন্সিলর জয়ন্তী রায় দাবি করেন, ‘‘অনাথবাবু মিথ্যা অভিযোগ করছেন। এর আগে পুরসভার তরফ থেকে ওঁকে ঘর দেওয়া হয়েছে। ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খুলতে বলা হয়েছিল। তা তিনি খোলেননি। তাই কোনও আর্থিক সাহায্য করা যায়নি।’’