পুর নিবার্চনের মুখে আমন্ত্রিত হয়ে তাদের জোনাল কাউন্সিলের সভায় গিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী নানা প্রতিশ্রুতি দেওয়ায় বিতর্কে জড়াল সিআইআই।
এ বার অন্য বিরোধী দলগুলিও তাদেরকে একই সুযোগ দেওয়ার দাবি তুলল। মঙ্গলবার দার্জিলিং জেলা সিপিএম এবং কংগ্রেসের তরফে কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে দুই তিন দিনের মধ্যে সভা ডেকে তাদেরও বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। তা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন সিআইআই কর্তৃপক্ষ। কেন না অন্যথায় সিআইআই-এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানানোর হুমকিও দিয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির একাংশ।
সোমবার সিআইআই এর জোনাল কাউন্সিলের সভায় মন্ত্রীকে বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দিয়ে প্রকারান্তরে প্রচারে সাহায্য করা হয়েছে বলে কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি’র মতো বিরোধী দলগুলি অভিযোগ তুলেছে। এই ঘটনায় বিধিভঙ্গের অভিযোগও তোলা হয়েছে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে। সিআইআই মন্ত্রীকে এ ভাবে ডেকে সেই সুযোগ করে দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও তোলা হয়েছে। ওই অভিযোগের ব্যাপারে খবর পৌঁছেছে সিআইআই-এর রাজ্য কমিটির কাছেও। রাজ্য কমিটির দায়িত্বে থাকা অন্যতম কর্মকর্তা গার্গী মিত্র বলেন, ‘‘শিলিগুড়িতে জোনাল কাউন্সিলের সভা ছিল। সেখানে মন্ত্রীর উপস্থিতি এবং তাঁর প্রতিশ্রুতি দেওয়া নিয়ে যে অভিযোগ উঠছে তার বিস্তারিত খোঁজ নিচ্ছি।’’ সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ জোনের চেয়ারম্যান নরেশ অগ্রবাল জানান, অনেক আগে থেকেই তাদের এই সভার বিষয়টি ঠিক ছিল। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাচক্রে সিআইআই-এর জোনাল কাউন্সিলের বৈঠক নির্বাচনের সময় পড়ে গিয়েছে। যে অভিযোগ উঠেছে সেই মনোভাব নিয়ে মন্ত্রীকে ডাকা হয়নি।’’
পুর নির্বাচনের মুখে তাদের উত্তরবঙ্গ জোনাল কাউন্সিলের সভায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবকে একমাত্র আমন্ত্রণ করায় এবং শহরের উন্নয়ন নিয়ে তাঁকে বক্তব্য রাখার সুযোগ করে দেওয়ায় সিআইআই-এর নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি মনে করছে। নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে অন্য দলগুলিকেও একই সুযোগ করে দেওয়া উচিত বলে দাবি উঠেছে। দুই তিন দিনের মধ্যে সদস্যদের নিয়ে বৈঠক ডেকে শহরের উন্নয়ন নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম প্রার্থী অশোক ভট্টাচার্যকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দিতে সিআইআই কে অনুরোধ করেছেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার। কংগ্রেসের জেলা সভাপতি শঙ্কর মালাকারও একই ভাবে চিঠি দিয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার সুযোগ চেয়েছেন।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জীবেশবাবু দাবি, নিবার্চন কমিশনের নিয়মেই বলা রয়েছে ভোটাররা প্রভাবিত হতে পারেন এমন কিছু মন্ত্রী করতে পারবেন না। সরকারি বা বেসরকারি কোনও প্রতিষ্ঠানকে মন্ত্রী বা তাদের দল একক ভাবে প্রচারে ব্যবহার করতে পারবেন না। জীবেশবাবু বলেন, ‘‘সে কারণে সিআইআই তাদের সদস্যদের ডেকে একই রকম ভাবে সভার আয়োজন করে আমাদেরকেও বলার সুযোগ দিক সেই আবেদন তাদের কাছে করা হয়েছে।’’ তা না হলে নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা তারা ভাববেন বলে সিপিএম নেতৃত্বের তরফে জানানো হয়েছে।