শিলিগুড়ি পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
আদালতের নির্দেশে অবৈধ নির্মাণ সংক্রান্ত একটি মামলায় শিলিগুড়ি পুরসভায় তদন্ত শুরু করল সিআইডি। ইতিমধ্যেই রেকর্ড রুম ‘সিল’ করা হয়েছে। সোমবার পুরসভায় যায় তদন্তকারী সিআইডি অফিসারদের একটি দল। তিনজন সিআইডি আধিকারিক গিয়ে পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পুরসভার রেকর্ড রুম খতিয়ে দেখতে পুরকর্মীদের সাহায্য চেয়েছেন। যাতে তাঁদের উপস্থিতিতে ওই কর্মীরা সেগুলো খোঁজার কাজে সাহায্য করেন।
ঘটনার সূত্রপাত শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডের একটি ভবনকে ঘিরে। ভবনটি যে ট্রাস্টের অধীনে, তার সদস্যদেরই একাংশ অভিযোগ তোলেন, ভবনটির কোনও নকশা নেই। ফায়ার লাইসেন্স নেই। অবৈধ ভাবে সেটি নির্মাণ করা হয়েছে। হাই কোর্টে ওই মামলায় জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চে বিচারক অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাসে উঠেছে। আদালত, পুরসভা এবং ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যদের একাংশ সূত্রেই জানা গিয়েছে, বিচারপতি ভবনের নকশা চেয়েছিলেন। অভিযোগকারীদের বিপক্ষে থাকা ট্রাস্টিদের একাংশের তরফে একটি প্রতিলিপি নকশা জমা করা হয়। বিচারক তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে আসল নকশা জমা করতে বলেন। সেই নকশা পুরসভার কাছে আছেই মিলতে পারে বলে আদালত পুরসভাকে তা জমা করতে সময় দেয়। একাধিকবার সময় দেওয়ার পরেও পুরসভা তা জমা করতে পারেনি বলে অভিযোগ। তা নিয়েই অসন্তুষ্ট বিচারপতি পুরসভার রেকর্ড রুম ‘সিল’ করতে বলেন। ওই বিল্ডিং প্ল্যান হারিয়েছে কি না, কী ভাবে হারাল তা তদন্ত করতে সিআইডিকে দায়িত্ব দেন। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হয়েছে।
পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া বলেন, ‘‘সিআইডি অফিসাররা এসেছিলেন। তাঁরা আদালতের নির্দেশ মতো খতিয়ে দেখবেন। তাই তাঁদের কোনও সাহায্য দরকার হলে আমরা করব। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে আর কিছু বলার নেই।’’
ট্রাস্টের একটি সূত্রেই জানা গিয়েছে, তাদের নিয়ম নীতি নিয়ে মতানৈক্যের জেরে দুই গোষ্ঠীর বিবাদ চলছে। তাকে ঘিরেই ট্রাস্টের অধীন এই ভবনটির নির্মাণ অবৈধ ভাবে হয়েছে বলে প্রশ্ন তোলে এক পক্ষ। অপর পক্ষের দাবি, কয়েক বছর আগে ভবনে লিফ্ট বসেছে। নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। অবৈধ হওয়ার কোনও বিষয়ই নেই। তবে বিষয়টি হাই কোর্ট পর্যন্ত গড়ানোয় এবং পুরসভার তরফে নকশা জমা করতে না পারায় বিষয়টি নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৮৯ সালে ওই ভবন তৈরি হলে, এত বছর আগের প্ল্যান কোথায় কী অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেটা জানা নেই বলেই সমস্যা তৈরি হয়েছে। পুরসভার রেকর্ড রুম বা পুরনো জিনিস রাখার যে জায়গা রয়েছে সেখান থেকে তা বার করার দায়িত্ব এখন সিআইডির উপর পড়েছে। আদালতের নির্দেশ পালন করতে এখন তারাও ময়দানে নেমেছেন।