উত্তেজিত গ্রামবাসীদের শান্ত করার চেষ্টা পুলিশকর্মীর। — নিজস্ব চিত্র।
দেড় মাসের বাচ্চাকে পর পর তিনটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরে মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পরিবারের। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ দিনাজপুরের রায়গঞ্জের গোয়ালপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। শিশুর পরিবারের দাবি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মীকে বরখাস্ত করতে হবে। ময়নাতদন্তের পরেই শিশুর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
সরকার নির্ধারিত ‘ইমিউনিটি বুস্টার ইঞ্জেকশনের’ জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে দেড় মাসের সায়ন বর্মণকে গোয়ালপাড়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। অভিযোগ, স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী মিতু সাহা পর পর তিনটি ইঞ্জেকশন দেন। অবশ্য সেগুলি সরকার নির্ধারিত রুটিন ইঞ্জেকশনের মধ্যেই পড়ে। শিশুটি কিছু সমস্যা নিয়েই জন্মেছিল। কিন্তু ইঞ্জেকশন দেওয়ার দিন তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের। ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর থেকেই অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকে ছোট্ট সায়ন। শুক্রবার সকালে একদম নিস্তেজ হয়ে পড়লে তাকে রায়গঞ্জ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এর পর গ্রামের সাধারণ মানুষ ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র ঘেরাও করেন। ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক মিতুকে মূল গেটে তালা দিয়ে ভিতরে আটকে রাখেন। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ। চলে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান ভবানন্দ বর্মণও। মিতুর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়েরা। অভিযোগ, মিতুকে শারীরিকভাবেও হেনস্থা করা হয়। গ্রামবাসীদের দাবি, বছরখানেক আগেও ওই স্বাস্থ্যকর্মী একটি শিশুকে ইঞ্জেকশন দেওয়ার পর সেখানে সংক্রমণ হয়ে গিয়েছিল। সে বার তিনি ভুল স্বীকার করে নিয়েছিলেন। কিন্তু এ বার আবার শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামবাসীরা মিতুকে বরখাস্তের দাবি তুলেছেন।
শিশুটির বাবা উপেন বর্মণ বলেন, ‘‘শিশুর শারীরিক পরীক্ষা না করেই পর পর তিনটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। সেই ইঞ্জেকশনগুলি নেওয়ার মতো ক্ষমতা আছে কিনা তা যাচাই করা হয়নি। এই স্বাস্থ্যকর্মীর বদলি নয়, আমি তাঁকে বরখাস্ত করার দাবি জানাচ্ছি।’’
পঞ্চায়েত প্রধান ভবানন্দ বলেন, ‘‘শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে শুনে এলাকায় এসেছিলাম। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ রয়েছে। পর পর তিনটি ইঞ্জেকশন দেওয়ার পরেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করছে পরিবার। তদন্তের পরেই বোঝা যাবে সত্যি কী ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দেখা যাক।’’