বন্যা সরকার (বাঁ দিকে)। শোকস্তব্ধ পরিজন। নিজস্ব চিত্র
পুজো শেষ হয়ে গিয়েছিল। পাড়ার সরস্বতী পুজোমণ্ডপে তখন কেউ ছিল না। পুজোর শেষে প্রতিমার সামনে জ্বলছিল মোমবাতি। আর সামনে রাখা ছিল বইখাতা। সেই বই নিতে গিয়ে কখন যে শাড়িতে আগুন লেগে গিয়েছে বুঝতে পারেনি বছর চারেকের শিশু। আগুন দেখে এক আত্মীয় তাকে উদ্ধারের চেষ্টা করলেও শেষপর্যন্ত মারা গেল সেই শিশুকন্যা। বুধবার দুপুরে এনজেপি থানার ঠাকুরনগরের ঘটনা।
পুলিশ জানায়, মৃত শিশুর নাম বন্যা সরকার (৪)। সবে একটি প্রাথমিক স্কুলে ভর্তি হয়েছিল ওই শিশু। আগুনে পুড়ে গুরুতর জখম অবস্থায় বন্যাকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। বুধবার রাতে সেখানেই মারা যায় ওই শিশু। চিকিৎসকদের দাবি, শরীরের বেশিরভাগটাই জ্বলে গিয়েছিল। ছোট্ট শিশু তা সহ্য করতে পারেনি।
পরিজনেরা জানাচ্ছেন, পুজোয় শখ করে শাড়ি পড়েছিল ছোট্ট মেয়েটি। বুধবার সকাল থেকেই শাড়ি পড়ে মণ্ডপের সামনে ছোটাছুটি করছিল মেয়েটি। স্কুলে ভর্তি হয়েছে বলে প্রতিমার সামনে বই রেখেছিল বাচ্চাটি। পুজো শেষ হতেই সেই বই আনার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু করে সে। প্রথমবার তার ঠাকুরমা বাধা দেন। কিন্তু পরে কেউ না থাকায় একাই গিয়ে বই তুলে গিয়েছিল। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। শিশুর ঠাকুরমা সুষমা সরকার বলেন, ‘‘বাধা দিয়েছিলাম প্রথমে। তারপর প্রসাদ বিলিতে ব্যস্ত হয়ে যাই। কোন ফাঁকে যে আবার প্রতিমার সামনে গেল। কিছুক্ষণ পরে চিৎকার শুনে মণ্ডপের কাছে গিয়ে দেখি আমার নাতনি জ্বলছে। বাঁচাতে পারলাম না।’’ নাতনিকে বাঁচাতে গিয়ে নিজেও জখম হয়েছে সুষমা। ঘটনার ধাক্কায় শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন শিশুর বাবা বিশ্বনাথ। কথাও বলতে পারছেন না। শোকে বিহ্বল পড়শিরাও।