— প্রতীকী চিত্র।
কারখানার পরিবেশ থমথমে। শনিবার সকালে অপরিচিত মুখ দেখে কারখানার গেট খুললেন না। কথা বলাতেও অনীহা দেখা গেল নিরাপত্তা রক্ষীদের। উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ার তিনমাইল হাট এলাকায় ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে, ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা পশ্চিমবঙ্গ ফার্মাসিউটিক্যালের এই কারখানা এখন বিতর্কের কেন্দ্রে। এই সংস্থার স্যালাইন (রিঙ্গার্স ল্যাকটেট) দেওয়ার পরেই মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হয়েছে সদ্যপ্রসূতি মামনি রুইদাসের, অসুস্থ আরও কয়েকজন— অভিযোগ এমনই। সংস্থার কর্ণধার শিলিগুড়ির বাসিন্দা কৈলাস মিত্রুকা। শিলিগুড়ির বর্ধমান রোডে তাঁর দফতরও এ দিন বন্ধ। শাটারে তালা লাগানো।
কারখানা যে এলাকায়, সেই সোনাপুর পঞ্চায়েতের অনেক বাসিন্দাও জেনে গিয়েছেন, ওই স্যালাইনে কোনও সমস্যা হচ্ছে। ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে ওই স্যালাইন-সহ বেশ কিছু ওষুধের। তাঁদের কয়েক জন জানান, কিছু দিন আগে পর্যন্ত দিনে অন্তত দুটো বড় ট্রাকে স্যালাইন বাইরে যেত। গত ১১ ডিসেম্বর থেকে উৎপাদন বন্ধের নোটিস কর্তৃপক্ষের তরফে কারখানার গেটে সাঁটানো হয়েছে। এখন ট্রাকে স্যালাইন বোঝাই হতে দেখা যাচ্ছে না।
এলাকার দোকানদার তরুণ তরফদার, নিখিল ঝার কথায়, ‘‘ওই কারখানায় নিম্ন মানের ওষুধ নিয়ে অনেক কিছু শোনা যাচ্ছে। অনেক মানুষকে কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’ তবে এ দিন কর্মীদের একাংশকে কারখানায় ঢুকতে দেখা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যাহ্নভোজের খাবার পৌঁছতে দেখা গিয়েছে বাড়ির লোকেদের। তবে সব পক্ষেরই মুখে কুলুপ। বহু চেষ্টার পরে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মী বলেন, ‘‘এই পরিস্থিতিতে কিছু বললে চাকরির সঙ্কট হতে পারে। তা ছাড়া, ফের উৎপাদন শুরু হবে, সে আশাও রয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, শাসক দলের ‘উঁচুতলায়’ যোগাযোগ রয়েছে সংস্থার কর্ণধার কৈলাসের। সে সূত্রে গত পাঁচ বছরে রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে স্যালাইন সরবরাহের ব্যবসা বেড়েছে সংস্থার। কৈলাস ফোন ধরেননি। জবাব দেননি মোবাইল-বার্তার। কারখানায় ছিলেন ম্যানেজার নিলু ত্রিপাঠী। তিনিও ফোন ধরেননি। নিরাপত্তা রক্ষীদের দিয়ে খবর পাঠালে বার্তা মেলে, ‘‘ব্যস্ত। দু’-তিন দিনের আগে কথা বলতে, দেখা করতে পারবেন না।’’ তৃণমূলের উত্তর দিনাজপুর জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘দলের উঁচুতলায় এই সংস্থার কারও যোগাযোগের বিষয়ে জানা নেই।’’