—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে গরু পাচারের তদন্তে নেমে এনামুল হক, গোলাম মোস্তাফাদের উত্তরবঙ্গের এক এজেন্টের খোঁজ পেয়েছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই। গোয়েন্দা সূত্রে বলা হয়েছে, বিএসএফ কর্তা-সহ ধৃতদের জেরা করে ওই ব্যক্তির নাম জানা গিয়েছে। কোচবিহার-অসম সীমানার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি উত্তরের জেলাগুলি ছাড়াও নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ সীমান্তে সক্রিয়। রাজ্য পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযুক্তের সম্পর্কে খোঁজখবর শুরু করেছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অফিসারেরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, ওই ব্যক্তি গরু পাচারের ব্যবসায় ‘চণ্ডী’ নামেই পরিচিত। গত কয়েক বছর ধরে সে উত্তরবঙ্গের গরু পাচারের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন বলে অভিযোগ। দাবি করা হয়েছে, চণ্ডীর নেতৃত্বে নেপাল থেকে খড়িবাড়ি হয়ে গরু পাচার করা হত বাংলাদেশে, আবার উত্তর দিনাজপুরের পাঞ্জিপাড়া দিয়ে বিহার থেকে গরু এনে অসমের দিকে পাচার করা হত বলেও অভিযোগ। গোয়েন্দাদের দাবি, আবার জয়গাঁ দিয়ে ভুটানের দিকেও পাচারে সক্রিয় ছিলেন এই চণ্ডী।
গোয়েন্দা সূত্রে দাবি, বিএসএফ-পুলিশের একাংশের যোগসাজশেই পাচার চালাতেন চণ্ডী। কোচবিহার লাগোয়া অসমের গৌরীপুর থেকে গুয়াহাটি পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ঘাঁটি থাকলেও প্রায়ই ওই ব্যক্তিকে শিলিগুড়ি, চোপড়া, জয়গাঁ, নেপালের কাঁকরভিটায় দেখা যায়। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান সীমান্তে চণ্ডীর এমন সক্রিয়তা গোয়েন্দাদের ভাবাচ্ছে। বিভিন্ন সীমান্ত বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ ছাড়া তা সম্ভব নয় বলেই গোয়েন্দাদের একাংশের দাবি। রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘গরু পাচারে জড়িতদের মধ্যে কয়েকটি নাম সামনে উঠে এসেছে। কেন্দ্রীয় সংস্থা খোঁজখবর করছে।’’
সিবিআই সম্প্রতি গরু পাচার তদন্তে নামার পরে বিএসএফ কর্তা সতীশ কুমারের নাম সামনে আসে। সিবিআই তাঁকে গ্রেফতারও করেছে। মালদহ ছাড়াও সতীশ কুমার জলপাইগুড়িতে কর্মরত ছিলেন। তিনি ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সাল অবধি মালদহের ৩৬ নম্বর ব্যাটেলিয়নের কমান্ডান্ট ছিলেন। তাঁর অধীনে মালদহ ছাড়াও মুর্শিদাবাদের সীমান্ত ছিল। সেই সময়ই এনামুল হকদের রমরমা ছিল। সীমান্তে গরু আটকে সেগুলিকে দুর্বল বা বাছুর বলে দেখিয়ে কম দামে নিলাম হত। তার পরে সেই সব গরু বাংলাদেশের বাজারে মোটা টাকায় পাচার হত। এই গরুর একটা অংশ উত্তর দিনাজপুর হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে ঢুকত বলে গোয়েন্দারা মনে করছেন। আর তা চণ্ডীর হাতেই যেত বলে মনে করা হচ্ছে। সিবিআইয়ের একটা দল সতীশ কুমারের সঙ্গে কাদের যোগাযোগ রয়েছে, তা দেখতে এসেছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই এজেন্টের সক্রিয়তা রয়েছে কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং জেলায়। সিবিআই অফিসারেরা এই সব জেলায় আসতে পারেন।