খাদে পড়ে গাড়ি। — নিজস্ব চিত্র
সিকিমে বেড়াতে গিয়ে খাদে গাড়ি উল্টে মৃত্যু হল এক পর্যটকের। মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ সিকিমের নামচির ঘটনা।
পুলিশ জানিয়েছে, খাদের ধারে দাঁড়িয়ে থাকা গাড়িটি গড়িয়ে প্রায় ৭০ ফুট নীচে পড়ে যায়। সব মিলিয়ে ১২ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে একজনকে নামচি হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করা হয়। তাঁর নাম জয়শ্রী অধিকারী (২৩)। তিনি হুগলির বাসিন্দা। তাঁর স্বামী পিনাকীবাবু-সহ বাকিরা ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন। ঘটনাচক্রে তাঁরা আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক তথা এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তীর পরিচিত। দুর্ঘটনাগ্রস্তরা সৌরভবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। খবর পেয়েই তিনি দার্জিলিঙের জেলাশাসক এবং নবান্নে ঘটনাটি জানান। দুর্ঘটনার খবর পৌঁছয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেও। এর পরেই নবান্নের নির্দেশে দার্জিলিঙের জেলাশাসক সিকিম প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সৌরভবাবুও শুক্রবার রাতেই কলকাতা থেকে রওনা দিয়েছেন। সৌরভবাবু বলেন, ‘‘সরকার সব ব্যবস্থা নিচ্ছে।’’ জখমদের আজ, শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আনার কথা। পর্যটকেরা সকলেই কলকাতা, হুগলির বাসিন্দা।
ওই গাড়িতে সপরিবারে ছিলেন অলোক পাল নামের ডানলপের বাসিন্দা তথা পেশায় ফোটোকপি মেশিনের ব্যবসায়ী। ১২ জনের মধ্যে তাঁর স্ত্রী, ছেলে, শাশুড়ি ও শ্যালিকা ছিলেন। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রের খবর, দলটি ৪ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি থেকে গ্যাংটক এসেছিল। এ দিন নামচি হয়ে পেলিং-এর দিকে যাওয়ার সময় একটি মূর্তি দেখার জন্য দলটি দাঁড়ায়। গাড়িটি রাস্তায় ধারে ঢালের কোনায় দাঁড় করানো ছিল। মূর্তিটি দেখে সকলে ফিরে গাড়িতে বসেন। অলোকবাবুর কথায়, ‘‘আমার ছেলে অগ্নিজ ডাস্টবিনে নোংরা ফেলার জন্য নিচে নেমেছিল। সেই সময় একটি জানলা না আটকানোয় হঠাৎ চালক আসন থেকে নেমে পড়েন। তার পরেই হুড়মুড় করে গাড়িটি গড়িয়ে নীচে খাদে গিয়ে উল্টে পড়ে। সকলের চিৎকারে লোকজন ছুটে আসেন।’’
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন এমন ঘটনা এড়াতে চালকদের সতর্ক করা হচ্ছে। ইস্টার্ন হিমালয়া ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশনের কার্যকরী সভাপতি সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘শীতের মরসুম শুরু হয়ে গিয়েছে। সকাল ও ভোরবেলা কুয়াশা পড়ছে। সেই সময় পর্যটদের না ঘোরাফেরাই করাই ভাল। তেমনই, গাড়ি খাদের ধারে রাখা, পাহাড়ে পর্যটকদের ওঠানো-নামানো নিয়েও চালকদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমরা সকলেই তা লক্ষ্য রাখতে বলছি।’’