কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ।
কোচবিহারের শীতলখুচিতে বিধানসভা ভোটে হিংসার মামলায় সিবিআইয়ের তদন্ত সম্পর্কিত চিঠির জবাব না দেওয়ায় কোচবিহারের জেলাশাসককে ‘ভর্ৎসনা’ করল কলকাতা হাই কোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ। শুক্রবার মামলার শুনানিতে সার্কিট বেঞ্চে বিচারপতি হরিশ টন্ডন এবং সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ কোচবিহারের জেলাশাসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
গত বিধানসভা ভোটে শীতলখুচিতে আনন্দ বর্মণকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। ওই মামলার তদন্ত-ভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। এক অভিযুক্ত জামিন চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেন। এ দিন সেই আবেদনের শুনানি ছিল। সে শুনানিতে সিবিআইয়ের আইনজীবীর তরফে জানানো হয়, মামলার তদন্ত শেষ হয়েছে। চার্জশিটও তৈরি। তবে মামলায় অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে অভিযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসকের অনুমতি প্রয়োজন হয়। গত দেড় বছরে একাধিক বার সিবিআই চিঠি দিলেও, জেলাশাসকের তরফে কোনও উত্তর আসেনি তাই চার্জশিট জমা দিয়ে চার্জ গঠন করা যায়নি। যা শুনে ডিভিশন বেঞ্চের মন্তব্য,সিবিআই তদন্ত হাতে নেওয়ার আগে বা পরে, একাধিক অভিযুক্তের জামিন হয়েছে। এ দিনের আবেদনের বিষয়বস্তুও খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু জেলাশাসক যে প্রয়োজনীয় অনুমোদন নিয়ে কিছু করেননি, সে নিয়েও ডিভিশন বেঞ্চ চোখ বুজে থাকতে পারে না।
জেলাশাসকের ভূমিকার সমালোচনা করেছে বেঞ্চ। কেন দেড় বছর ধরে জেলাশাসকের তরফে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি, তা নিয়ে দশ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছে বেঞ্চ। বেঞ্চের নির্দেশ, ওই দশ দিনের মধ্যেই জেলাশাসককে অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইন নিয়ে নিজের অবস্থান জানাতে হবে। ঘটনাচক্রে, গত দেড় বছরে কোচবিহারে এক বার জেলাশাসক বদলিও হয়েছেন। বিষয়টি ‘বিচারাধীন’ বলে জানিয়ে কোচবিহার জেলা প্রশাসনের কেউ মন্তব্য করতে রাজি হননি।
সিবিআইয়ের তরফে এ দিন ডেপুটি সলিসিটার জেনারেল সুদীপ্ত মজুমদার বলেন, “নিয়ম অনুযায়ী তিন মাসের মধ্যে জেলাশাসককে অনুমতি দিতে হয়। কিন্তু সিবিআই যত বারই চিঠি দিয়েছে, কোনও ফল মেলেনি। সিবিআইয়ের চার্জশিট তৈরি থেকে সব প্রক্রিয়ায় শেষ করা রয়েছে। কিন্তু অস্ত্র এবং বিস্ফোরক আইনে মামলার অনুমতি না মেলায়, সেগুলি জমা দেওয়া যায়নি।” জামিনের আবেদনকারী অভিযুক্তের আইনজীবী শুভাশিস মিশ্র বলেন, “ডিভিশন বেঞ্চ কোচবিহারের জেলাশাসকের থেকে রিপোর্ট চেয়েছে। সে রিপোর্ট পেলে তার পরে জামিনের আবেদন বিবেচনা করা হবে।”