ইদের ২৪ ঘণ্টা আগেও ফাঁকাই নেতাজিপুর বাজার। নিজস্ব চিত্র
আমপানের প্রভাব কাটলেও এখনও আকাশে জমে রয়েছে মেঘ। দেখা নেই চাঁদের। আর ইদের ২৪ ঘণ্টা আগেও রবিবার সকাল থেকেই দোকানের ঝাঁপ খুলে বসে থাকলেও মালদহের বাজারে ক্রেতাদের দেখা নেই। ব্যবসায়ীদের দাবি, মেঘ কেটে গেলেই ফের চাঁদ দেখা যাবে। কিন্তু ব্যবসায় যে ঘাটতি তৈরি হচ্ছে, তা কবে মিটবে বলতে পারছেন না কেউই। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, যেভাবে করোনা-আমপানের সাঁড়াশি আক্রমণে জেলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড ভেঙে গেল, তা কবে মেরামত হবে কিছুই বোঝা যাচ্ছে না।
আজ ইদ। কালিয়াচক থেকে শুরু করে হরিশ্চন্দ্রপুর, চাঁচল থেকে মোথাবাড়ি, পুরাতন মালদহ, ইংরেজবাজারের মসজিদগুলিতে চলে নমাজ পাঠ। তারপরে এলাকায় এলাকায় শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যাতে সামিল হন সব সম্প্রদায়ের মানুষই। যদিও এবারের ছবিটা একেবারেই আলাদা। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বার্তা দিচ্ছে স্বাস্থ্য দফতর। সেই বার্তাই বাসিন্দাদের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন ইমামেরা। ইংরেজবাজারের আটকোশি আকবরিয়া ইসলামিয়া কমিটির সভাপতি মহম্মদ ফারুক হোসেন বলেন, ‘‘সংক্রমণ ক্রমশ বাড়ছে। এ অবস্থায় সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতেই হবে। তার জন্য এবার ইদের নমাজ বাড়িতেই পাঠ করব।’’ সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে উৎসব করার আহ্বান জানান রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীও।
সব বুঝলেও ইদের কেনাকাটায় ভাটা পড়ায় চিন্তায় ব্যবসায়ীরা। এ দিন সকাল থেকেই শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই বাজারে আনাজ, মুদি, ওষুধের দোকানের পাশাপাশি কাপড়, জুতো, মনোহরি সামগ্রীর দোকান খোলা রয়েছে। তবে ক্রেতার দেখা নেই। ইংরেজবাজারের নেতাজি পুরবাজারের ব্যবসায়ী রমেন সাহা বলেন, ‘‘টানা দু’মাস দোকান খুলিনি। শেষ মুহূর্তে কেনাকাটা হবে ভেবেছিলাম। কিন্তু ক্রেতাদের দেখা নেই।’’ কালিয়াচকের বাসিন্দা দিলবর শেখ, হামিদুর মিয়াঁরা বলেন, ‘‘টাকাই নেই, কী করে কেনাকাটা করব!’’
আর তাই বছরের অন্যতম ব্যবসার সময় ইদে মরসুমে কোটি টাকার লোকসানের মুখ দেখতে হল বলে দাবি করেছেন মালদহের মার্চেন্ট চেম্বার অফ কর্মাসের সম্পাদক জয়ন্ত কুণ্ডু। তিনি বলেন, ‘‘লকডাউনের মধ্যে ১লা বৈশাখ গিয়েছে, ইদও গেল। কী হবে জানি না।’’