India Lockdown

আমলারাই তথ্য খুঁজবেন

আবেদনকারীদের সকলের ‘লোকেশন’ খুঁজতে হচ্ছে প্রশাসনকে। প্রথমত, আবেদনকারীর এই জেলার স্থায়ী ঠিকানায় লোক পাঠিয়ে যাচাই করতে হচ্ছে।

Advertisement

অনির্বাণ রায় 

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২০ ০৭:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

লকডাউনের সৌজন্যে গোয়েন্দাগিরির পাঠ নিতে হচ্ছে সাধারণ প্রশাসনে থাকা সরকারি আমলাদেরও। মোবাইলের সিম কার নামে, যখন ফোন করা হয় তখন সেই সিম কোন মোবাইলে ছিল, কোন এলাকা থেকে ফোন এসেছিল এই সব যাবতীয় খোঁজখবর রাজ্য এবং কেন্দ্রের গোয়েন্দা সংস্থাই করে থাকে। তার জন্য সংস্থার অফিসারদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এবার জেলা প্রশাসনের আমলাদের উপর এই খোঁজের ভার পড়েছে। সৌজন্য একটি সরকারি প্রকল্প। লকডাউনে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য স্নেহপরশ নামে একটি প্রকল্প ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তাতে আটকে পড়া শ্রমিকদের এক হাজার টাকা করে পাঠানো হবে। শর্ত একটাই শ্রমিককে ভিন্রাজ্যে আটকে থাকতে হবে। এবং প্রকল্পে নথিভুক্ত হওয়ার আবেদন শ্রমিককে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে বা অনলাইনে করতে হবে। যাঁরা আবেদন করলেন, তাঁরা সত্যি ভিন্রাজ্যে রয়েছেন কিনা তা যাচাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের আমলাদের। মিথ্যে তথ্য দিয়ে কেউ য়াতে সরকারি সুবিধে না পেয়ে যায় সে কারণেই আপাতত জেলা প্রশাসনের আমলারা ‘কোঅর্ডিনেট,’ ‘ইনটেল,’ ‘লোকেশন ট্র্যাকে’র মতো দুঁদে গোয়েন্দাদের পরিভাষায় কথাবার্তা বলছেন। শিখতেও হচ্ছে মোবাইলের অবস্থান জানার কলাকৌশল। পরিচিত পুলিশ অফিসারদের থেকে কলাকৌশল শিখছেন আমলারা।

Advertisement

জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও পর্যন্ত প্রায় সাতশো শ্রমিক স্নেহপরশ প্রকল্পে আবেদন করেছে। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক অভিষেক তিওয়ারির কথায়, “এই প্রকল্পে আটকে পড়া শ্রমিকদের খুবই উপকার হবে।”

আবেদনকারীদের সকলের ‘লোকেশন’ খুঁজতে হচ্ছে প্রশাসনকে। প্রথমত, আবেদনকারীর এই জেলার স্থায়ী ঠিকানায় লোক পাঠিয়ে যাচাই করতে হচ্ছে। আশপাশের ব্যবসায়ী বাসিন্দাদের থেকে জানতে হচ্ছে শেষ কবে ওই ব্যক্তিকে এলাকায় দেখা গিয়েছিল। সেই ব্যক্তি কোথায় কাজ করেন সে সম্পর্কেও এলাকায় খোঁজ নিতে হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের খোঁজ পুরো পেশাদারি গোয়েন্দাদের কাজের মতো। যে মোবাইল ফোন থেকে পরিযায়ী শ্রমিক আবেদন করেছেন, সেটি কার নামে নেওয়া রয়েছে জানতে হবে। যখন ফোন করা হয় তখন সেটি কোন শহরে কোন এলাকায় ছিল তা জানতে হচ্ছে। তার পরে জানতে হচ্ছে বর্তমানে সেই ফোনের অবস্থান বদলে যায়নি তো।

Advertisement

জেলার এক পদস্থ আমলার কথায়, “পুরোদস্তুর গোয়েন্দাগিরিই করতে হচ্ছে। ধরা যাক কেউ জানালেন সে মুম্বইতে রয়েছেন। যে সময় ফোনে আবেদন করা হয়েছিল তখন সেই ফোনটির অবস্থান মুম্বইতে ছিল কিনা দেখতে হবে। তারপরে যাচাই করতে হবে সেটি কতদিন ধরে মুম্বইতে রয়েছে এবং বর্তমানে ফোনটি মুম্বইতে রয়েছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে। এটা গোয়েন্দাগিরি নয়ত কী!”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement