দাবি: বালুরঘাট পুলিশ সুপার অফিসের সামনে আদিবাসীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র
ভারত জাকাত মাঝি পরগনা আদিবাসী সংগঠনের অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে এক সদস্যকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, মঙ্গলবার ওই সংগঠনের দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর থেকে চুনুয়া ওঁরাও(৬৫) নামে ওই সদস্য নিখোঁজ ছিলেন। বুধবার সকালে তাঁর দেহ বংশীহারির আন্ধারমানিক এলাকার একটি ইটভাটার পাশের পুকুরের ধার থেকে উদ্ধার হয়। তার পরেই খুনের অভিযোগ তুলে সরব হন সংগঠনের এক পক্ষের সদস্যরা। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবিতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার পুলিশ সুপারের কাছে ডেপুটেশনও দেন সংগঠনের উত্তরবঙ্গের নেতারা।
সংগঠনের রাজ্য নেতা বাপি সরেন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘ঝামেলার জেরে আমাদের এক সদ্যসকে খুন হতে হল। পুলিশ অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার না করলে এবং বংশীহারি থানার আইসি-কে বদলি না করা হলে আমরা উত্তরবঙ্গ জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
গন্ডগোলের সূত্রপাত গত মঙ্গলবার। ওইদিন এই আদিবাসী সংগঠনের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা নেতৃত্বের রদবদল হয়। সংগঠন সূত্রে খবর, আগের জেলা সভাপতি বাবুলাল মুর্মূকে সরিয়ে তাঁর জায়গায় আশিস মুর্মূকে জেলা সভাপতি করা হয়। নতুন কমিটি বংশীহারির পাথরঘাটা এলাকায় প্রথম বৈঠকে বসে। সেই বৈঠক থেকে প্রাক্তন জেলা সভাপতি বাবুলালের কাছ থেকে সংগঠনের হিসেব চাওয়া হয়। তা নিয়েই নতুন সভাপতির সঙ্গে পুরনো সভাপতির ঝামেলা শুরু হয়।
অভিযোগ, প্রাক্তন সভাপতি বাবুলাল দলবল নিয়ে নতুন সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের উপরে সশস্ত্র হামলা চালান। হামলায় নতুন সভাপতি আশিস-সহ ১০ জন গুরুতর আহত হয়ে রসিদপুর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে রয়েছেন। হামলার পর থেকে চুনুয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে তাঁর পরিবারের দাবি। এ দিন তাঁর দেহ উদ্ধার হতেই বাবুলাল ও তাঁর অনুগামী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তোলা হয়।
নিহতের ছেলের দাবি, চুনুয়ার পিঠে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। থানায় দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত বাবুলাল পলাতক। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করা এবং বংশীহারির আইসি মনোজিত সরকারের বদলির দাবিতে সংগঠনের রাজ্য নেতারা পুলিশ সুপারের কাছে দরবার করেছেন।
জেলার পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। সমস্ত অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’