উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। ফাইল চিত্র।
গবেষকদের আন্দোলনের জেরে টানা সাতদিন তালাবন্ধ ছিল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। কর্তৃপক্ষের একটি সূত্র জানাচ্ছে, সেই কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত বিভাগের বাজেট মিটিং বাতিল হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ৭৬টি বিভাগ রয়েছে। আলাদাভাবে প্রতিটি বিভাগের বাজেট সভা করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে পাঠাতে হয়। তারপরই মেলে আর্থিক বরাদ্দ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫ সেপ্টেম্বর রিপোর্ট পাঠানোর শেষ দিন। সঠিক সময়ে রিপোর্ট না পৌঁছলে বরাদ্দ মিলবে না বলে জানিয়েছেন আধিকারিকদের একাংশ। এত কম সময়ের মধ্যে সমস্ত বাজেট সভা শেষ করে রিপোর্ট তৈরি আদৌ সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
রেজিস্ট্রারের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২১ অগস্ট থেকে বাজেট সভাগুলো হওয়ার কথা ছিল। তবে ওইদিন থেকেই ক্যাম্পাস তালাবন্ধ করে আন্দোলনে নামে গবেষকদের একটা অংশ। মঙ্গলবার বেলা ২টা নাগাদ প্রশাসনিক ভবনের তালা খোলা হয়। ওইদিন কোনও কাজ করা সম্ভব হয়নি বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকদের একাংশ। এক আধিকারিক জানান, বাজেট সভায় একটি বিভাগে সারাবছর ধরে যেসব কাজ হবে তারজন্য প্রয়োজনীয় খরচের হিসাব অনুমোদিত হয়। সেই সংক্রান্ত টাকা দেয় রাজ্য সরকার। তাই রাজ্যকে হিসাবের বিস্তারিত তথ্য দিতে হয়। অর্থ বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বাজেট তৈরি না হলে বা রাজ্য থেকে বরাদ্দ না মিললে পদে পদে আর্থিক সমস্যা দেখা দেবে।’’
টানা সাতদিন কাজ বন্ধ থাকায় অর্থ বিভাগের অন্য কাজেও জটিলতা সৃষ্টি হয়ছে বলেই জানিয়েছেন আধিকারিকদের একাংশ। কী সমস্যা? এক আধিকারিক জানান, পুজোর বোনাস এবং ফেলোশিপের অনুদান সংক্রান্ত অনেক কাজের জন্য প্রয়োজনে ছুটির দিনও অর্থ দফতর খোলা রাখাতে হতে পারে বলে আগেই রেজিস্ট্রারের দফতরে জানান হয়েছিল। সেইসব কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। টানা একমাস পুজোর ছুটির জন্য কর সংক্রান্ত বিভিন্ন কাগজপত্র আগে থেকেই তৈরি করতে হত। বন্ধের জেরে সেই কাজেও জটিলতা তৈরি হয়েছে। ওই আধিকারিক আরও জানান, প্রতিমাসের ২২ তারিখের মধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি কর্মীর উপস্থিতি ও অনুপস্থিতি সংক্রান্ত রিপোর্ট অর্থ বিভাগে জমা দিতে হয়। তার ভিত্তিতেই সেই মাসের বেতনের কাগজপত্র তৈরি হয়। ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় চলতি মাসে সেইরিপোর্ট এখন পর্যন্ত অর্থ বিভাগে জমা পরেনি। রেজিস্ট্রার দিলীপ কুমার সরকার বলেন, ‘‘বাজেট সভা নিয়ে সত্যিই আমরা চিন্তায়। টানা সাতদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলে নানা ধরনের সমস্যা হয়। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’