চিকিৎসাধীন: সীমান্তে হামলায় জখম বিএসএফ জওয়ানেরা। বৃহস্পতিবার হবিবপুরে। নিজস্ব চিত্র
সীমান্তে গরু পাচার রুখতে গিয়ে হামলার মুখে পড়লেন বিএসএফ জওয়ানেরা। তাতে জখম হন চার জওয়ান। বুধবার রাতে ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার সকালে মালদহের হবিবপুর থানার কেদারি সীমান্তে গুলিবিদ্ধ দু’টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে গত রাতের সংঘর্ষেই তাঁদের মৃত্যু হয়েছে কিনা, তা জানতে তদন্ত চলছে।
বিএসএফ জানিয়েছে, বুধবার রাতে সীমান্ত দিয়ে গরু পাচারের চেষ্টা করে একদল কারবারী। টহলরত জওয়ানেরা বাধা দিতে গেলে তাঁদের উপরে হামলা চালানো হয়। চার বিএসএফ জওয়ান আহত হন। তাঁদের হাত, পায়ে আঘাত লাগে। সকলকে হবিবপুরের বাহাদুরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার বিএসএফের এক কর্তা বলেন, ‘‘পাচারকারীরা জওয়ানদের উপরে হামলা চালায়। জওয়ানেরা পাল্টা গুলি চালায়। তবে জওয়ানদের গুলিতেই ওই দু’জনের মৃত্যু হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মালদহের পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়াও। তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তে উদ্ধার হওয়া গুলিবিদ্ধ দু’টি দেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। নিহতেরা বাংলাদেশের বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের নাম সঞ্জীব কুমার (২৪) ও কামাল আলি (২৬)। দু’জনের বাড়িই বাংলাদেশের নওগাঁয়। পুলিশ জানিয়েছে, নিহত দু’জনেরই পেটে একটি করে গুলি লেগেছে। গরু পাচারের দায়ে বাংলাদেশেরই এক জনকে আটক করেছে বিএসএফ। পরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
বিএসএফ সূত্রে খবর, হবিবপুর থানার ১২ মাইল এলাকার কেদারি সীমান্তে টহলদারির দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফের ১৫৯ নম্বর ব্যাটেলিয়ন। সীমান্তের ওই এলাকায় কাঁটাতারের বেড়া নেই। চাষের জমি রয়েছে। সীমান্ত উন্মুক্ত হওয়ায় দেদার পাচার চলে বলে অভিযোগ। অভিযোগ, শীতের মরসুমে কুয়াশার সুযোগ নিয়ে কৃষিজমি দিয়ে ওপারে ব্যাপক ভাবে গরুপাচার চলে।
চাষের জমি নষ্ট করে পাচারের ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরাও। তাঁদের দাবি, উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে সারা বছরই গরুপাচার চলে। যার ফলে জমির ফসল নষ্ট হয়। পশু কারবারীরা জমির ফসল নষ্ট করে। তা রুখতে সীমান্ত এলাকায় আরও টহলদারি প্রয়োজন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের। তাঁদের কয়েক জন জানান, বুধবার গভীর রাতে সীমান্ত একাধিক গুলির শব্দ শোনা যায়। এর পরেই এদিন সকালে চাষের জমিতে অজ্ঞাতপরিচয় দুই যুবকের গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ দেখা যায়।