ভিভিপিএটি মেশিন। —নিজস্ব চিত্র।
এ বার ভোটের মুখে বোমা বিস্ফোরণ হল মালদহের কালিয়াচকের সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বিস্ফোরণ হয় বলে অভিযোগ। ঘটনাটি ঘটেছে সুজাপুরের গয়েশবাড়ির ফিরনচক গ্রামে। ঘটনায় হতাহতের কোনও খবর পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলে যায় কালিয়াচক থানার পুলিশ, তবে ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
কংগ্রেস নেতৃত্বর অভিযোগ, নির্বাচনের এলাকায় সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য তৃণমূল কর্মীরা বোমা মজুত করছে। সেই মজুত করে রাখা বোমাতেই বিস্ফোরণ হয়েছে বলে দাবি করেছেন সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক ইশা খান চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘‘আমি পুলিশকে পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। কারণ, এই কেন্দ্রে তৃণমূলের হার নিশ্চিত। তার জন্য মানুষের মনে সন্ত্রাস সৃষ্টির জন্য তৃণমূল কর্মীরা বাড়িতে বাড়িতে বোমা মজুত করে রাখছে। এ দিন, এক তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। পুলিশের উচিত এলাকায় মজুত রাখা বোমা উদ্ধার করা।’’
যদিও এ দিনের ঘটনায় তৃণমূলের কোনও যোগ নেই বলে দাবি করেছেন নেতৃত্ব। তাঁদের পাল্টা দাবি, কংগ্রেস কর্মীর বাড়িতেই এ দিন বোমা বিস্ফোরণ হয়েছে।
ওই কেন্দ্রের তৃণমূলের প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী (লেবু) বলেন, ‘‘কংগ্রেসকর্মীরা বোমা মজুত করে রাখছে। এ দিনের ঘটনাতেও কংগ্রেসের কর্মীরাই যুক্ত রয়েছেন। এখানে আমাদের কেউ জড়িত নেই।’’
ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সৈয়দ ওয়াকার রেজা। তিনি বলেন, ‘‘একটি বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের খবর পেয়েছি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর ঘটনার জড়িতদের খোঁজেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’’
গত ডিসেম্বর মাসে কালিয়াচকের সুজাপুরে বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল দুই জনের। ভর দুপুরে পরিত্যক্ত প্লাস্টিকের গুদামে বোমা ফাটে। পুলিশ জানিয়েছিল, বোমা বাঁধতে গিয়েই তা ফেটে গিয়েছিল। আর সেই বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছিল দুই যুবকের। এই ঘটনাতেও নাম জড়িয়েছিল শাসক দলের এক স্থানীয় নেতা লিটন শেখের। তাঁর গুদামেই বোমা তৈরির কাজ চলছিল বলে পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছিলেন। ঘটনায় এখনও অভিযুক্ত লিটনকে গ্রেফতার করাতে পারেনি পুলিশ।
এ বার ভোটের মুখে ওই কেন্দ্রের গয়েশবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের বাখরপুরের ফিরনচক গ্রামের বাসিন্দা কালু শেখের বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ হয় বলে পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালু এলাকায় তৃণমূল কর্মী হিসেবে পরিচিত। তাঁর পাঁচ ছেলে। বছর খানেক আগে এলাকায় একটি খুনের ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনাতেই নাম জড়ায় কালু ও তাঁর ছেলেদের। তারপর থেকেই তারা ফেরার ছিল বলে জানিয়েছে কালিয়াচক থানার পুলিশ।
এ দিন কালু শেখের বাড়ির তিন তলার ছাদে বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলে যায় কালিয়াচক থানার পুলিশ। পরে মালদহ থেকে ডিএসপি দিলীপ হাজরার নেতৃত্বে আরও পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করে। ওই এলাকায় টহল দেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, কালু শেখের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ছাড়া, প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে, মজুত রাখা বোমা থেকেই এদিন বিস্ফোরণ হয়ে থাকত পারে।