ফাইল চিত্র।
শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি দুই পুরসভাই চলে গিয়েছে প্রশাসক বোর্ডের অধীনে। এখন কী ভাবে চলবে পুরসভার কাজ। কারা কোন দায়িত্ব সামলাবেন সেই নিয়ে বৈঠকে বসল দুই প্রশাসক বোর্ডই।
শিলিগুড়ি
শুধুমাত্র নাগরিক পরিষেবা নয়, বাসিন্দাদের প্রয়োজনে বিভিন্ন শংসাপত্র দিতে পারবেন শিলিগুড়ির ৪৭টি ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটরেরা। সেই সঙ্গে তাঁদের হাতে আর্থিক ক্ষমতার দেওয়ার বিষয়েও চিন্তাভাবনা শুরু করল শিলিগুড়ির প্রশাসক বোর্ড। কলকাতা পুরসভার মতই শিলিগুড়িতেও বিদায়ী কাউন্সিলরদের কো-অর্ডিনেটর পদে বসিয়েছে পুরসভার প্রশাসক বোর্ড। সোমবার এই সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
প্রতিটি ওয়ার্ড কমিটির এবং সলিড ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের মাথায় কো-অর্ডিনেটরদের রাখা হয়েছ। কো-অর্ডিনেটরেরা পাবেন মাসিক ভাতাও। কলকাতা পুরসভা প্রথম এই ব্যবস্থা চালু হয়েছে। সেখান থেকেই প্রয়োজনীয় নথিপত্র আনানো হয়েছে। প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারপার্সন অশোক ভট্টাচার্য জানান, ‘‘শুধুমাত্র নাগরিক পরিষেবার তদারকি করলে হবে না। বাসিন্দাদের নানা শংসাপত্রের প্রয়োজন হবে। কো-অর্ডিনেটরেরা তা দেবেন। তাঁদের আর্থিক ক্ষমতা নিয়েও আমরা আলোচনা করছি।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, বাম-ডান নির্বিশেষে ৪৭ জন বিদায়ী কাউন্সিলরকে ওয়ার্ডের কোঅর্ডিনেটর করার সরকারি নির্দেশ জারি করা হয়েছে। রোজকার জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি নালা সাফাই, স্যানিটাইজ়েশনের কাজ, ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে স্প্রে ছাড়াও কোনও এলাকায় করোনা সন্দেহভাজন দেখা দেওয়া মাত্রই স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা এবং পুলিশের সঙ্গে কো-অর্ডিনেটরেরা সমন্বয় সাধন করে নানা কাজের দেখভাল করবেন।
পুরসভার সদ্য প্রাক্তন বিরোধী দলনেতা তৃণমূলের রঞ্জন সরকার বলেছেন, ‘‘শহরবাসীর স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে আমরা সহযোগিতা করব। নইলে বিরোধিতার রাস্তা তো রয়েছে।’’
পুরসভার আধিকারিকেরা জানান, এখন প্রশাসক বোর্ড অবং কো-অর্ডিনেটরেরাই পুর কাজকর্ম চালাবেন। শুধু এরা নির্বাচিত না হওয়ায় রাজ্য সরকারের হস্তক্ষেপ সব সময় থাকবে।
জলপাইগুড়ি
পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিয়মমতো এখন কাউন্সিলররা পদে নেই। পুরসভার কাজ সামলাতে তৈরি হয়েছে প্রশাসক বোর্ড। এখন শহরের ২৫টি ওয়ার্ডের কাজকর্ম কী ভাবে দেখভাল করা হবে, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ফের বৈঠকে বসবে জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলী। মঙ্গলবার পুরসভায় প্রশাসক মণ্ডলীর প্রথম বোর্ড মিটিং ছিল। এ দিন প্রশাসকদের মধ্যে দফতর ভাগাভাগি করা হয়েছে। কিন্তু ওয়ার্ডগুলিতে পরিষেবা দিতে কী ভাবে কাজ হবে তা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে এ দিন পৌঁছতে পারেনি প্রশাসক মণ্ডলী। তাঁদের একাংশের দাবি, এ নিয়ে আইনি জটিলতা রয়েছে। আইনের সব সংস্থান দেখে নিয়েই পদক্ষেপ হবে।
প্রশাসকমণ্ডলীর প্রথম বৈঠকে ব্যাঙ্কের কাজকর্ম দেখভালের দায়িত্ব বদলে দেওয়া হয়েছে। এতদিন বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহন বসু-সহ তিন কাউন্সিলরের চেক সই করার ক্ষমতা ছিল। এ দিন থেকে সেই ক্ষমতা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন পাপিয়া পাল, সদস্য সন্দীপ মাহাতো, সৈকত চট্টোপাধ্যায়ের উপর দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে ফিন্যান্স অফিসার এবং নির্বাহী আধিকারিকও থাকছেন।
বিদায়ী বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান পাপিয়া পাল, চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য সন্দীপ মাহাতো এবং সৈকত চট্টোপাধ্যায় তিনজনেই প্রশাসক বোর্ডে রয়েছেন। এঁদের হাতে আগে যে গুরুত্বপূর্ণ দফতর ছিল সেগুলিই রেখে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসক মন্ডলী থেকে বাদ পড়েছেন বিদায়ী চেয়ারম্যান পরিষদের সদস্য পৌলমী সাহা। তাঁর হাতে থাকা দফতরগুলি প্রশাসকমণ্ডলীর বাকি দুই নিপু সাহা এবং বিশ্বজিত সরকারের মধ্যে ভাগ করা হয়েছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার প্রথম প্রশাসক বোর্ডের মিটিঙে দেখা গেল বিদায়ী চেয়ারম্যানের বসার চেয়ারকে পিছনে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে চেয়ারম্যানের ঘরে মোহন বসুর নাম ফলক আছে। ঘর তালাবন্ধ ছিল। সভার শেষে পাপিয়া পাল জানান, তিনি চেয়ারম্যানের ঘরে বসবেন না।