বেঙ্গল সাফারি পার্কে কৃষ্ণসার হরিণ। —নিজস্ব চিত্র।
টিউবারকুলোসিসে আক্রান্ত হয়েছে বেঙ্গল সাফারিতে থাকা একাধিক কৃষ্ণসার হরিণ বা ব্ল্যাক বাক ডিয়ার। সদ্য তাদের শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয়েছিল। এই রোগ নির্ণয়ের পর থেকে উদ্বেগে বন দফতরের আধিকারিকেরা।
বেঙ্গল সাফারি পার্ক সূত্রে খবর, গত ফেব্রুয়ারি মাসে জামশেদপুর টাটা মেমোরিয়াল জুয়োলজিক্যাল পার্ক থেকে ১২টি কৃষ্ণসার হরিণ ও চারটি হগ ডিয়ার আনা হয়েছিল। এক মাস তাদের নজরদারিতে রাখার পর গত এপ্রিল মাসে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের নির্দেশে সেগুলোকে পর্যটকদের জন্য বেঙ্গল সাফারি পার্কের ‘এনক্লোজার’-এ ছেড়ে দেওয়ার হয়। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি কৃষ্ণসার হরিণ টিউবারকুলোসিস বা টিবিতে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর।
মাত্র চার মাসের মধ্যে কী ভাবে ওই কৃষ্ণসার হরিণগুলি টিবিতে আক্রান্ত হল, তা নিয়ে চিন্তায় পার্ক কর্তৃপক্ষ। আক্রান্ত হরিণগুলিকে এনক্লোজার থেকে সরিয়ে নিভৃতবাসে রাখা হয়েছে। রুটিনমাফিক হরিণগুলোর স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি হরিণের জীবনযাত্রার উপর সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। এর পর পার্কের আধিকারিকেরা চারটি হরিণের নমুনা কলকাতার প্রাণীসম্পদ উন্নয়ন দফতরের গবেষণাগারে পাঠান। তাতে চারটির মধ্যে দু’টি কৃষ্ণসার হরিণের নমুনায় টিবি পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ইতিমধ্যে টিবিতে আক্রান্ত হরিণগুলোর চিকিৎসা শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সাফারি পার্ক সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে আরও বেশ কয়েকটি হরিণ একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে।
অন্য দিকে, পার্ক কর্তৃপক্ষর অবহেলার কারণেই ওই সংক্রমণ হয়েছে বলে অভিযোগ পশুপ্রেমী সংগঠনের। কারণ, বেঙ্গল সাফারি পার্কে কয়েক মাস ধরে কোনও বায়োলজিস্ট নেই। একমাস আগেই এক বায়োলজিস্ট ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগ করেছেন। বায়োলজিস্ট ছাড়াই কী ভাবে বেঙ্গল পার্ক চলছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এ নিয়ে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সৌমিত্র দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘এতে চিন্তার কোনও বিষয় নেই। অধিকাংশ হরিণের মধ্যে এই সংক্রমণ প্রায়ই লক্ষ্য করা যায়। যখন কোনও চিড়িয়াখানা বা আবদ্ধ জায়গায় ওদের রাখা হয়, তখন এরকম এই সংক্রমণ লক্ষ করা যায়। আক্রান্ত কৃষ্ণসার হরিণগুলোকে ভ্যাকসিন ও ওষুধ দিয়ে সুস্থ করে তোলা হয়। বেঙ্গল সাফারি পার্কে তাদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।’’