উদ্ধার হওয়া ব্যাঙ্কের পাসবই। নিজস্ব ছবি।
কয়েক হাজার টাকা বিনিময়ে গরিব মানুষের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ভাড়া নিয়ে চলত কারবার। হাওয়ালার মাধ্যমে আসা কালো টাকা ব্যাঙ্কে খাটিয়ে সাদা করা হত। এমন একটি চক্রের হদিস পেতেই গোপন অভিযান চালিয়ে ৪০০টি ব্যাঙ্কের পাসবই, এটিএম কার্ড উদ্ধার করল শিলিগুড়ির পুলিশ। ওই চক্রের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতেরা প্রত্যেকেই শিলিগুড়ির বাসিন্দা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
গোপন সূত্র মারফত খবর পেয়ে শুক্রবার সকালে শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বিশেষ দল মাটিগাড়ার ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিনয়কৃষ্ণপল্লি এলাকার একটি বহুতলে হানা দেয়। ওই বহুতলে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কাজকর্ম চলত বলে খবর পুলিশ সূত্রে। ওই অভিযানে আটক হন রোহিত সিংহ, বিজয় মাহাতো এবং সুজিত অধিকারী নামে ৩ ব্যক্তি।
পুলিশ সূত্রে দাবি, বিভিন্ন জায়গা থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার ওই অফিসে কোটি কোটি টাকা আসত। সেই টাকার উৎস অবৈধ কল সেন্টার, ডিজিটাল মুদ্রার কারবার। আসত অনলাইন প্রতারণা চক্রের টাকাও। সেই টাকাই সাদা করা হত গরিব মানুষের অ্যাকাউন্ট মাসিক আট হাজার টাকার বিনিময়ে ভাড়া নিয়ে। তবে টাকার অঙ্কের হিসাব এখনও করে উঠতে পারেননি তদন্তকারীরা। তাঁদের দাবি, তল্লাশি অভিযানে মিলেছে বেশ কয়েকটি নামী-বেনামি সংস্থার সিলমোহরও।
তদন্তকারীরা জানান, তিন ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অভিষেক বনসল নামে আরও এক জনের নাম উঠে এসেছে। পেশায় হিসাব নিরীক্ষক (চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট) অভিষেক শিলিগুড়ির খালপাড়ার এমআর রোডের বাসিন্দা। তাঁর অফিসেও হানা দেয় গোয়েন্দা বিভাগ। সেখান থেকেও উদ্ধার হয় বহু নথি। তবে পুলিশ সূত্রের দাবি, অভিষেক বর্তমানে দুবাইয়ে রয়েছেন।
শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার অখিলেশ চতুর্বেদী বলেন, ‘‘আমাদের কাছে অনেক দিন ধরেই এই খবর ছিল। আজ তল্লাশি চালিয়ে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে। মূলত গরিব মানুষদের অ্যাকাউন্ট করিয়ে দিয়ে তাঁদের মাসে ৮ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে সেগুলি ব্যবহার করত এঁরা। প্রতারণা চক্রের টাকা পাঠানো হত ওই অ্যাকাউন্টগুলিতে। এর সঙ্গে আর কারা জড়িত, তা খতিয়ে দেখছি আমরা।’’