আসানসোলে শুভেন্দু অধিকারীর কম্বলদান কর্মসূচিতে মৃত্যুর ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। —ফাইল চিত্র।
আসানসোলের কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে রাজ্যকে এখনই এফআইআর করার অনুমতি দিল না কলকাতা হাই কোর্ট। শুক্রবার হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের নির্দেশ, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর করতে চাইলে রাজ্যকে যথাযথ বেঞ্চে যেতে হবে। এ নিয়ে এখনই কোনও অন্তর্বর্তী নির্দেশ দেবে না আদালত।
বুধবার আসানসোলে কম্বলদান কর্মসূচিতে পদপিষ্ট হয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করার অনুমতি নিয়ে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য। তবে রাজ্যের সে আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এর পর কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রাজ্য। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার একক বেঞ্চের নির্দেশ পরিবর্তন করার আর্জিও জানানো হয়। প্রসঙ্গত, শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ২৬টি এফআইআর-এর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি মান্থা। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ ছিল, ভবিষ্যতে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করতে হলে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।
শুক্রবার হাই কোর্টে রাজ্য জানায়, বিচারপতি মান্থা নির্দেশের শেষে জানিয়েছেন, আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও এফআইআর করা যাবে না। কিন্তু এই ঘটনায় এফআইআর করা জরুরি। যা নিয়ে বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘রাজ্য কি কোনও প্রাথমিক তদন্ত করছে? ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে? এফআইআর করার আগেও এগুলি হওয়া প্রয়োজন। এই সংক্রান্ত আর একটি মামলা প্রধান বিচারপতির এজলাসে বিচারাধীন। সে ক্ষেত্রে এই বেঞ্চ কি করবে? আপনারা কি ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিলেন চ্যালেঞ্জ করে?’’ যদিও শুক্রবার আদালতে বিচারপতির এ সমস্ত প্রশ্নের স্পষ্ট কোনও উত্তর দিতে পারেনি রাজ্য। এর পরই এই মামলায় অন্তর্বর্তী কোনও নির্দেশ দেননি হাই কোর্ট।
রাজ্য সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল বলে আদালতে শুভেন্দুর আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার জানিয়েছেন। তবে শীর্ষ আদালতে এ নিয়ে শুনানি হয়নি।
আসানসোলের বিপর্যয়কাণ্ডে ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি এবং তাঁর স্ত্রী চৈতালি তিওয়ারি-সহ বেশ কয়েক জনের বিরুদ্ধে আসানসোল উত্তর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে কর্মসূচির অন্যতম আয়োজক তথা আসানসোল পুরসভার বিরোধী নেত্রী চৈতালি-সহ বিজেপির কয়েক জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে মামলাও রুজু হয়েছে। এ নিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে পাঁচ জনকে।