মাথাভাঙার রুই ডাঙায় বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িতে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। নিজস্ব চিত্র।
‘আক্রান্ত’ নেতা-কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দিতে কোচবিহারের একাধিক গ্রামে ঘুরে বার্তা দিলেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার বিজেপির কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের পরাজিত প্রার্থী তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক, দলের জেলা সভাপতি সুকুমার রায়, বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে, জেলা সম্পাদক বিরাজ বসু-সহ দলের নেতাদের এক প্রতিনিধি-দল জেলার বিভিন্ন গ্রামে যান। দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিজেপির টিকিটে জয়ী পঞ্চায়েত সদস্য, প্রধানদের অনেকের সঙ্গেও দেখা করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন কোচবিহার উত্তর বিধানসভা এলাকা থেকে বিজেপি নেতৃত্বের ওই কর্মসূচি শুরু হয়। ওই বিধানসভা এলাকার ঢাংঢিংগুড়ি, গোপালপুর, বড়রাংরস-সহ একাধিক এলাকায় যান তাঁরা। স্থানীয় বিজেপি নেতা-কর্মী থেকে পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। পরে মাথাভাঙা মহকুমার রুইডাঙাতেও যান বিজেপির প্রতিনিধি-দলের সদস্যরা। রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অশ্বিনী বর্মণের বাড়িতেও যান প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী।
সেখানে নিশীথ বলেন, “গত কাল বৈঠক করেই আমরা রাস্তায় নেমেছি। নির্বাচন আসবে, যাবে। কিন্ত সাধারণ মানুষের উপরে অত্যাচার হচ্ছে। অত্যাচারিত মানুষের পাশে আমরা থাকব। আমাদের যাঁরা ভাই,আমাদের পরিবারের যাঁরা সদস্য, বিজেপির যাঁরা সদস্য, তাঁদের সঙ্গে আমরা থাকব।” প্রকাশ্যেই নিশীথের হুঁশিয়ারি, “তৃণমূলের যে নেতারা চাঁদাবাজি করছে, প্রয়োজন হলে আমরা তাদের ঘেরাও করব। জবাব চাইব। চোখে চোখ রেখে লড়াই করব।”‘ আক্রান্ত’দের সমস্ত বিষয়ে পাশে থাকার কথাও জানিয়েছেন তিনি। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায় কর্মীদের উদ্দেশে ‘সংগঠিত’ ভাবে লড়াইয়ের বার্তা দেন। রুইডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান অশ্বিনী বর্মণ বলেন, “তৃণমূলের চোখরাঙানি উপেক্ষা করতে বলা হয়। দল পাশে আছে।”
তৃণমূলের বক্তব্য, অভিযোগ ভিত্তিহীন। ভোটে হেরে বিভ্রান্তি ছড়াতে অপপ্রচার হচ্ছে। এ দিন মাথাভাঙায় তৃণমূলের একটি কর্মসূচিতে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, “জামাইষষ্ঠী করার জন্য আমাদের প্রাক্তন এমপি জেলায় ফিরেছেন। ভোটে পরাজিত হয়ে পরের দিনই দিল্লি চলে গিয়েছিলেন।” উদয়ন আরও বলেন, “আজকে সংবাদপত্রে দেখছিলাম, নিশীথ প্রামাণিক নাকি মাথাভাঙায় আসবেন। মাথাভাঙা মহকুমায় এসে যাঁরা আক্রান্ত তাঁদের বাড়ি গিয়ে দেখা করবেন। যেখানে খুশি যেতে পারেন। আমার একটাই বক্তব্য, এগুলি বিজেপি নেতা-কর্মীদের কানে তুলে দিন, উনি আসবেন পঞ্চাশটা কেন্দ্রীয় বাহিনীর সিকিউরিটি নিয়ে, কিন্তু যাঁর বাড়িতে যাবেন ও ফিরে যাওয়ার পরে তাঁর বাড়িতে নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা করে যাবেন? নিজের নিরাপত্তা বাহিনী থেকে কী চার জনকে ওই বাড়িতে রেখে দিয়ে যাবেন। যাবেন না। অশান্তি করতে আসে।”
ওই অশান্তির আশঙ্কা রুখতে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের ডাক দেন উদয়ন। তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিত দে ভৌমিক বলেন, “ফলপ্রকাশের পরে প্রাক্তন সাংসদ এক সপ্তাহ জেলায় ছিলেন না। এ নিয়ে বিজেপির সাধারণ কর্মীরা ক্ষোভে ফুঁসছেন। ওই ক্ষোভে রাশ টানতে নেতাদের নিয়ে ঘুরে বেড়িয়ে শেষ একটা চেষ্টা করছেন।”