ছবি: সংগৃহীত।
কার ভাগ্যে ছিঁড়বে প্রার্থীপদের শিকে? শিলিগুড়িতে বিজেপি দফতরে এই প্রশ্নই এখন বড় হয়ে উঠেছে।
কেন? বিজেপি সূত্রেই জানা গিয়েছে, আসন্ন বিধানসভা ভোটে শিলিগুড়ি থেকে প্রার্থী হতে শুরু হয়েছে প্রবল টানাপড়েন। টিকিট প্রত্যাশীর সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। দল সূত্রে বলা হচ্ছে, সেই সংখ্যা ডজন ছাড়িয়েছ। তাতে এক দিকে যেমন রয়েছেন একাধিক বাঙালি মুখ, তেমনই মিশ্র জনজাতির শহরে অবাঙালি প্রত্যাশীর সংখ্যাও কম নয়। দলের একটি অংশের আবার দাবি, বিশিষ্টজনদের দিয়েও সওয়াল করানো হচ্ছে বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে। চলতি সপ্তাহে তাঁরা একাধিক বৈঠক করে রাজ্য ও কেন্দ্রের নেতাদের যুক্তি বোঝানোর চেষ্টা শুরু করেছেন।
বিজেপির রাজ্য কমিটির এক নেতার কথায়, ‘‘শিলিগুড়ি এখন মিশ্র জনজাতির শহর। বাঙালির সঙ্গে প্রচুর অবাঙালি ভোটারও আছেন। তাই দলের একটি অংশ মনে করছে, বাঙালি প্রার্থী রাখা জরুরি, আবার অন্য একটি দলের মত, প্রথা ভেঙে অবাঙালি প্রার্থী হলে ফল ভাল হবে। দেখা যাক কী দাঁড়ায়!’’
শিলিগুড়ি থেকে দীর্ঘদিন ধরে বিধায়ক অশোক ভট্টাচার্য। ২০১১ সালে তাঁকে হারিয়েছিলেন তৃণমূলের রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। ২০১৬ সালে ফের অশোক জিতে ফিরে আসেন। কিন্তু ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটের সময়ে এই আসন থেকে ৬০ হাজারের বেশি ভোটে ‘লিড’ পান বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। তার পর থেকেই বিজেপি মনে করছে, এই কেন্দ্রে তাদের জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ফলে প্রার্থীপদের প্রত্যাশীর সংখ্যাও দিন দিন বাড়ছে। বিজেপির একটি সূত্র জানাচ্ছে, রাজু নিজে অবাঙালি, গোর্খা সম্প্রদায়ভুক্ত। তিনি গেরুয়া প্রার্থী হয়েছিলেন বলেই এত ভোট পেয়েছিলেন। তাই প্রার্থী নয়, পদ্মফুল থাকলেই এ বার শিলিগুড়ি বাজিমাত করা যেতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন। আরেক দলের যুক্তি, মূল প্রতিপক্ষ শিলিগুড়িতে অশোক ভট্টাচার্য ময়দানে থাকছেনই ধরে নেওয়া যায়। তৃণমূলও কোমর বাঁধছে। তাদের প্রার্থীও বাঙালি হতে পারে। সেখানে বাঙালি না অবাঙালি, এই পরিচয়টা গুরুত্ব পেতেও পারে।
কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের একাংশ প্রাক্তন শিলিগুড়ির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি, প্রয়াত অভিজিৎ রায়চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ কাউকে প্রার্থী করার পক্ষে।
কিন্তু জেলার নেতাদের মধ্যে অন্তত তিন জন নিজেরাই প্রার্থী হতে চেয়ে আবেদন করেছেন। তেমনিই, তিন জন প্রাক্তন মহিলা কাউন্সিলর, তিন জন ব্যবসায়ী, দু’জন চিকিৎসকও প্রার্থী হতে চেয়েছেন। তবে আপাতত সবার থেকে এগিয়ে আছেন বাঙালি এক বাস্তকার। তাঁকে নিয়ে দলের একটা অংশ অত্যন্ত আশাবাদী। তবে যুক্তি, পাল্টা যুক্তি যা-ই থাক, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপরেই, জানিয়ে দিয়েছেন শহরের বিজেপি নেতারা।