বিজেপি কার্যালয়ে চলছে রান্না-খাওয়ার প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটের ফল বেরনোর পর শাসকদলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ করছে বিরোধীরা। ভোটের ফলপ্রকাশের পর ‘হিংসা’র হাত থেকে প্রাণ বাঁচাতে বিজেপির জেলা কার্যালয়ে আশ্রয় নিলেন প্রায় ১০০ জন বিজেপি নেতাকর্মী। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বিভিন্ন প্রান্তে ভোটের পর জয়ী প্রার্থী বা বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। শুক্রবার বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি কার্যালয়ে ওই ঘরছাড়া বিজেপি নেতাকর্মীরা আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানেই থাকা-খাওয়া শুরু করেছেন তাঁরা। বিজেপির অভিযোগ, রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের পর বিরোধী নেতাকর্মীরা নিজেদের বাড়িতে থাকাই বিপজ্জনক বলে মনে করছেন। তাই নিজেদের আবাস ছাড়ছেন তাঁরা। আর এ নিয়ে পুলিশ প্রশাসনও কোনও ইতিবাচক ভূমিকা নিচ্ছে না।
আনন্দ বর্মণ নামে বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘ভোটের ফল বেরতেই আমাদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। শাসকদলের তরফে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও পাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়েছি আমরা। যাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, তাঁরা দলীয় কার্যালয়ে এসে উঠেছি। অনেকে আত্মীয়-পরিজনের বাড়িতে গিয়ে উঠেছেন।’’
বিজেপির অভিযোগ, ইতিমধ্যে তাদের কয়েক জন কর্মীর বাড়িঘরে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি কর্মীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে বালুরঘাটে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা বিজেপি কার্যালয়। এ নিয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘ভোটের আগে এবং ভোটের ফল প্রকাশের পর সন্ত্রাস চলছেই। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে জেলা তথা বাংলায়। এখানে আমাদের শতাধিক কার্যকর্তা বাড়ি যেতে পারছেন না। তাঁরা পার্টি অফিসে আশ্রয় নিয়েছেন।’’
যদিও একে মিথ্যা অভিযোগ বলে দাবি করেছে জেলা তৃণমূল। তাদের দাবি, ভোটে সারা দক্ষিণ দিনাজপুরে কোনও হিংসার ঘটনা ঘটেনি। ফলের পরও কোনও ঘটনা ঘটেনি। এই ঘটনায় তৃণমূল জেলা সহ-সভাপতি সুভাষ চাকি বলেন, ‘‘বিজেপি রাজ্যে ৩৫৫ জারি করার চক্রান্ত করছে। তাই এ সব মিথ্যা কারসাজি। ভোটে গোলমালের কারণে যাঁদের নামে পুলিশে আভিযোগ দায়ের হয়েছে, তাঁদের পার্টি অফিসে রেখে ‘বাড়িছাড়া’-র নাটক করছে বিজেপি।’’