—প্রতীকী চিত্র।
এফআইআর দায়ের হওয়া থেকে চার্জশিট জমায় লেগেছে মাত্র ৬০ দিন। চার্জ গঠনে আরও এক মাস। তার ১০ দিনে শুনানি শুরু। পরের মাসেই ১১ জন সাক্ষীর বয়ান নিয়ে মামলা শেষ। বেকসুর খালাস পেয়েছেন দণ্ডি-কাণ্ডে বালুরঘাট পুরসভার কাউন্সিলর তথা অভিযুক্ত প্রদীপ্তা চক্রবর্তী এবং আরও দু’জন। রাজ্যের একাধিক আদালতে ফৌজদারি মামলার পাহাড় জমেছে বছরের পর বছর। দক্ষিণ দিনাজপুরে বিখ্যাত দণ্ডি-কাণ্ডের মামলা কোন ম্যাজিকে মাত্র সাড়ে চার মাসেই নিষ্পত্তি হল, প্রশ্ন তুলেছে বিজেপি।
তপনের ৩ আদিবাসী মহিলাকে দণ্ডি কাটানোর মামলায় যেন প্রথম থেকেই ‘গোলমাল’ বলে বিজেপির অভিযোগ। যাঁরা দণ্ডি কেটেছিলেন তাঁরা অভিযোগ দায়ের করেননি। তপনের এক ব্যক্তি অভিযোগ দায়ের করেন ঠিকই, কিন্তু দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা অতিরিক্ত দায়রা আদালতের আইনজীবীদের দাবি, তিনি আদালতে গিয়ে পরে দাবি করেন, তাঁকে কয়েক জন বলেছিল বলে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে কী আছে তা তিনি জানেন না বলে দাবি করেন।
অভিযুক্তদের জামিনের প্রসঙ্গ এলে তিন মহিলা কোনও আপত্তি তোলেননি। পর পর দু’দিনের সাক্ষ্যগ্রহণে ১১ জন সাক্ষীর অনেকেই কিছু দেখেননি এবং জানেন না বলে আদালতের কাছে দাবি করেন। দণ্ডি কেটেছিলেন যে মহিলারা, তাঁদের এক জনকে শাসকদল পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী করে। তিনি জিতেও যান। তার স্বামী ছিলেন মামলার ৫ নম্বর সাক্ষী। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার আগেই পুলিশ আমাকে অভিযুক্তদের ছবি দেখায়। পরে গিয়ে সেই অভিযুক্তদের শনাক্ত করি। এই ঘটনা আদালতেও জানিয়েছি।’’
বিজেপির জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূল নেত্রী বলে প্রথম থেকেই মামলা নিয়ে নিজেদের মতো করে পদক্ষেপ করেছে পুলিশ এবং প্রশাসন। পুরোটাই প্রভাব খাটিয়ে করা।’’ বিষয়টি নিয়ে প্রদীপ্তা বলেন, ‘‘সুকান্ত মজুমদারের পাড়া থেকে আমি জিতেছি বলে বিজেপি আমাকে ভয় পায়। আদালতের রায় ওরা মানে না তাই এ সমস্ত উদ্ভট অভিযোগ তুলছে।’’ জেলা পুলিশ সুপার চিন্ময় মিত্তাল কিছু বলতে চাননি। হোয়াটস অ্যাপ বার্তা পাঠিয়েও কোনও জবাব মেলেনি। দণ্ডি-কাণ্ডে দলের ভাবমূর্তি ব্যাপক ভাবে ধাক্কা খায় বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। ঘটনা নিয়ে প্রথম থেকেই পুলিশের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছিলেন জেলা তৃণমূল সভাপতি মৃণাল সরকার। তিনি বলেন, ‘‘দণ্ডি মামলার রায় কবে ঘোষণা হল! যদি পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত না করে থাকে, তাহলে তা ভাল হয়নি।’’