বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা।—ফাইল চিত্র।
মঙ্গলবার লোকসভায় তিন শ্রম বিধি সংক্রান্ত আলোচনায় রাজ্যের চা বাগানের প্রসঙ্গ তুললেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা। তাঁর দাবি, ‘‘দার্জিলিং, তরাইয়ের ৪০০ চা-বাগানের কাছে আজকের দিনটা আনন্দের। কারণ, এই সমস্ত বিধি পাশ হয়ে নতুন আইন এলে, তার ফলে উপকৃত হবেন ওই সমস্ত বাগানের কর্মীরা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের (কল-কারখানায়) অন্যত্র দৈনিক ন্যূনতম মজুরি সাড়ে তিনশো টাকার উপরে। কিন্তু চা বাগানের কর্মীরা সেই সুবিধা পান না। সেখানে ওই মজুরির অঙ্ক ১৭৬ টাকা। নতুন আইনে সেই সমস্যা মিটবে।’’
একই সঙ্গে রাজুর কটাক্ষ, ‘‘এই বিল পাশের পরে বরং হাসি ফিরবে পাহাড়ের মুখে।’’ রাজ্যের আর এক সাংসদ দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘চা-বাগান এবং তার শ্রমিক— সকলেরই হাল খারাপ। প্রায় একশো বাগান বন্ধ। সময়ে মজুরি-রেশন পাওয়ার ঠিক নেই। অথচ সেখানকার ২০% জমি আবাসন নির্মাণে দেওয়ার কথা বলেছে রাজ্য।’’
এর জবাবে রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব অবশ্য পাল্টা আক্রমণ করেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে। বলেছেন, ‘‘২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদী উত্তরবঙ্গে এসে একাধিক বাগান অধিগ্রহণের কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন। ছ’বছরে ওই বাগানগুলির একটাও চা পাতা হেলেনি। কেন্দ্র বাগানের জন্য মুখে ভাষণ দেওয়া ছাড়া কিছু করেননি।’’ মন্ত্রী জানান, ‘‘সেখানে চা পরামর্শদাতা কমিটি, ১০০ কোটির তহবিল, মজুরি বৃদ্ধি, সর্বোচ্চ বোনাস চুক্তি ছাড়াও একের পর এক বাগান খুলেছে রাজ্য। বাগানের রাস্তা, রেশন, মিড ডে মিল, চিকিৎসা— কী করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!’’
তবে শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, বিজেপিশাসিত অসমেও যে বাগানের হাল ভাল না, সেটা উঠে এসেছে সে রাজ্যের বিজেপি সাংসদ পল্লব লোচন দাসের কথায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘স্বাধীনতার এত বছর পরেও চা বাগানের ছবি বিবর্ণ। রাস্তা থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ— অধিকাংশ ক্ষেত্রের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা তাদের বরাতে জোটে না। কর্মীরা মজুরির অর্ধেক পান রেশন-সহ সামগ্রীতে। বাকি নগদে। কিন্তু নতুন আইনে মজুরির ৮৫% নগদে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।’’ তাই নতুন আইনে কর্মীদের সুবিধা হবে বলেই তাঁর দাবি।