হুগলির বিজেপি সাংসাদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না। —নিজস্ব চিত্র।
কামারকুন্ডু রেলের ওভারব্রিজ চালু না হওয়ার পিছনে দায়ী সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক বেচারাম মান্না। এই দাবি করে তাঁর বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন হুগলির বিজেপি সাংসাদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। লকেটের দাবি, তোলাবাজিতে অসুবিধা হবে বলেই এই ওভারব্রিজ উদ্বোধনে গড়িমসি করছেন বেচারাম। যদিও বেচারামের পাল্টা দাবি, এ বিষয়ে জোর করে নাক গলাচ্ছেন লকেট।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ দিনের দাবি মেনে ২০১৫ সালে হুগলির কামারকুন্ডুতে ওভারব্রিজের নির্মাণকাজ শুরু করে রেল। গত বছরের অক্টোবরে সে কাজ শেষ হলেও তার উদ্বোধন হয়নি। ফলে সমস্যায় পড়েছেন স্থানীয়েরা। ওভারব্রিজ উদ্বোধন নিয়ে গত ছ’মাস ধরে রাজ্য এবং রেলের মধ্য তরজা অব্যাহত। লকেটের দাবি, গত ছ’মাসে একাধিক বার উদ্বোধনের তারিখ স্থির হলেও নানা কারণ দেখিয়ে তাতে বাধা দিয়েছেন বেচারাম।
মঙ্গলবার কামারকুন্ডু রেল ব্রিজের নীচে একটি সভার পর তিনি বলেন, ‘‘গত ৩০ এপ্রিল এই ব্রিজটি উদ্বোধন করার জন্য রেলের পক্ষ থেকে বেচারাম মান্নাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্না একধিক অজুহাত দেখিয়ে সেই উদ্বোধন স্থগিত করে দেন।’’ লকেটের অভিযোগ, ‘‘এই ব্রীজ চালু হলে বিধায়কের তোলাবাজি বন্ধ হয়ে যাবে। সে কারণেই এটি তৈরি হলেও তা চালু করা যায়নি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ওভারব্রিজ চালু হলেও সাবওয়ে চালু রাখতে হবে বলে দাবি ছিল স্থানীয়দের। সে দাবিও মেনে নিয়েছে রেল।’’
যদিও লকেটের অভিযোগ নস্যাৎ করে বেচারামের পাল্টা দাবি, ‘‘এখানে ওভারব্রিজের যেমন দরকার, তেমন সাবওয়েরও প্রয়োজন। কারণ কামারকুন্ডু রেল গেটের দু’দিকে ব্যাঙ্ক-স্কুল-বাজার রয়েছে। লকেট চট্টোপাধ্যায়ের এখানে বাড়ি হলে তিনি এটা বুঝতেন। তোলাবাজদের নিয়ে এসেছেন ব্রিজে দাঁড়িয়ে তোলা তুলতে। চাইছেন, ওঁকে কেউ ঢিল ছুঁড়ু্ক, তা হলে ছবি হবে। এটা সিঙ্গুর আন্দোলনের আর এক নাম। কেউ ওঁর প্ররোচনায় পা দেবেন না।’’ লকেটকে আক্রমণ করে বেচারামের আরও দাবি, ‘‘সাংসদ হিসাবে তিনি ব্যর্থ। এ এলাকা ওঁর নির্বাচনক্ষেত্র নয়। উনি জোর করে নাক গলাতে চাইছেন।’’
বেচারামের আরও দাবি, ‘‘ওভারব্রিজের কাজ শুধু রেল করেনি। রাজ্য সরকারও করেছে। ওঁরা রাজ্যকে না জানিয়ে নিজেরাই উদ্বোধন করতে চাইছে। আমাদের দাবি, সাবওয়ে করে ব্রিজ চালু হোক। সেটা রেলও বুঝেছে। প্লাটফর্ম জুড়ে দিলে মানুষগুলো যাবে কোথা দিয়ে? আমরা চাই, কেজিডি পঞ্চায়েতে যে মিটিং হয়েছিল, সেই অনুযায়ী সাবওয়ের কাজ শুরু হোক। সাইকেল যাওয়ার জন্য লেভেল ক্রসিংয়ে তিন ফুট জায়গা ফাঁকা থাকুক।’’