বিজেপি সাংসদকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। — নিজস্ব চিত্র।
বেহাল রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স না ঢোকায় শুক্রবার খাটিয়ায় শুইয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় মালদহের বামনগোলার এক তরুণীর। ঘটনার প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর সেই বাড়িতে গিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়লেন মালদহ উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু। শেষ পর্যন্ত রাস্তা তৈরি করতে নিজের সাংসদ তহবিল থেকে টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিক্ষোভ থেকে মুক্ত হন সাংসদ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, মালডাঙা গ্রামের বাসিন্দা, বছর পঁচিশের গৃহবধূ মামণি রায় গত দু’তিন দিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন। শুক্রবার দুপুরে তাঁর অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর জন্য বধূর পরিজনেরা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে পাঠান। কিন্তু বেহাল রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স তো দূরস্থান, গ্রামে কোনও যানবাহনই ঢোকে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। কোনও উপায় না দেখে মুমূর্ষু ওই বধূকে খাটিয়ায় তুলে গ্রামের মেঠো পথ পেরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। গন্তব্য ছিল বামনগোলার গ্রামীণ হাসপাতাল। কিন্তু বেহাল রাস্তা পেরিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে অনেকটা দেরি হয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তরুণীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার পর থেকেই প্রতিবাদে সরব হয়েছেন গ্রামবাসী। বিষয়টিতে লেগেছে রাজনীতির রংও। বিরোধীদের দাবি, তৃণমূল সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণেই এই মর্মান্তিক ঘটনা। অন্য দিকে, রাস্তা না হওয়ার দায় বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকারের দিকেই ঠেলেছে তৃণমূল। এই পরিস্থিতিতে রবিবার মৃতের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করতে যান খগেন। কিন্তু সেই বাড়িতে ঢোকার আগেই ঘেরাও হয়ে যান বিজেপি সাংসদ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ওই এলাকার বিধায়ক ছিলেন খগেন। এখন সাংসদ হয়েছেন। তার পরেও রাস্তা তৈরি হয়নি। সেই কারণে খগেনকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের দাবি মেনে বামনগোলার বিডিওর সঙ্গে ফোনে কথা বলেন খগেন। তাতেও ক্ষোভ কমেনি গ্রামবাসীদের। শেষ পর্যন্ত নিজের সাংসদ তহবিল থেকে রাস্তা তৈরির জন্য ১৩ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে বলে বিডিওকে জানান বিজেপি সাংসদ। তার পর শান্ত হন গ্রামবাসীরা।