বিজেপির উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।
কালিয়াগঞ্জে দলের পরাজয়ের পিছনে অন্তর্ঘাত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা দলের উত্তরবঙ্গের পর্যবেক্ষক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়।
দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা উপনির্বাচনে দলের হারের কারণ বুঝতে বৃহস্পতিবার কর্ণজোড়ায় রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জের দলীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজু। বৈঠকে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা বিজেপির নেতা ও কর্মীরাও হাজির ছিলেন। বৈঠকের পরে এ দিন সন্ধ্যায় রায়গঞ্জে দলের জেলা কার্যালয়ে দ্বিতীয় দফায় পর্যালোচনা বৈঠক করেন রাজু। পরে তিনি দাবি করেন, ‘‘এই পরাজয়ের পিছনে দলীয় নেতা-কর্মীদের একাংশের অন্তর্ঘাত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করছি। খবর পেয়েছি, কালিয়াগঞ্জে তৃণমূল জয় পেতে প্রচুর কালো টাকা নিয়ে প্রচারে নেমেছিল। বিজেপির কিছু নেতা-কর্মী তৃণমূলের প্রলোভনে পা দিয়ে টাকা নিয়ে অন্তর্ঘাত করে থাকতে পারেন।’’
রাজুর কথায়, ‘‘কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির হারের কোনও কারণ ছিল না। এটা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। শুক্রবার কালিয়াগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা ঘুরে বাসিন্দা, দলীয় নেতা ও কর্মীদের সঙ্গে কথা বলব। পরে এখানে দলের পরাজয় নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে রিপোর্ট পাঠাব।’’
এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রচারের প্রধান উপদেষ্টা অসীম ঘোষ বলেন, ‘‘এনআরসি, সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি ও মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ এবং উন্নয়নের স্বার্থে কালিয়াগঞ্জের মানুষ উপনির্বাচনে তৃণমূলকে জয়ী করেছেন। বিজেপির কুকীর্তি ও পরাজয় ঢাকতে উনি তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছেন।’’ তবে রাজুর পাল্টা দাবি, নির্বাচনে এনআরসির কোনও প্রভাব পড়েনি।
গত লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি তৃণমূলের থেকে প্রায় ৫৭ হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ওই কেন্দ্রের বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী তপন দেবসিংহ প্রায় আড়াই হাজার ভোটে বিজেপি প্রার্থী কমলচন্দ্র সরকারকে পরাজিত করেন।
বিজেপি সূত্রে খবর, আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে কালিয়াগঞ্জ, ডালখোলা ও ইসলামপুর পুরসভায় নির্বাচন হওয়ার কথা। এই পরিস্থিতিতে কালিয়াগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের পরাজয়ের হতাশা কাটিয়ে ওই তিনটি পুর এলাকায় দলকে শক্তিশালী করার বিষয়ে বিজেপির জেলা নেতৃত্বকে এ দিন বিভিন্ন নির্দেশ দেন রাজু।