খুনের ঘটনায় মন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ তুলেছেন তিন প্রশ্ন। —ফাইল চিত্র।
তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও শেষ রক্ষা হল না। কোচবিহারের দিনহাটার পুটিমারিতে দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন এক বিজেপি নেতা। শুক্রবার প্রশান্ত রায় বসুনিয়া নামে ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা গুলি চালায় বলে অভিযোগ। অন্য দিকে, স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহের দাবি, নিজের বন্দুক নাড়াচাড়া করতে গিয়েও দুর্ঘটনায় মৃত্যু হতে পারে ওই বিজেপি নেতার।
বিজেপি নেতার মৃত্যুর খবর পেতেই তীব্র উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারির দাবিতে দিনহাটার সড়ক অবরোধ করেন বিজেপি নেতৃত্ব। পুটিমারিতে রাস্তায় বসে প্রতিবাদে শামিল হন বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়, নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মিহির গোস্বামী, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মণ প্রমুখ। বিক্ষোভ করেন বিজেপির মহিলা মোর্চার নেতৃত্বও। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর থেকেই তাদের কর্মীদের উপর অত্যাচার চালিয়ে আসছে রাজ্যের শাসকশিবির। তা এখনও চলছে। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল। তাদের দাবি, এই ঘটনায় শাসকদলের কেউ জড়িত নয়।
নিহত প্রশান্তের বাড়ি পুঁটিমারি পঞ্চায়েতের শিমুলতলায়। শুক্রবার দুপুরে বাড়িতেই ছিলেন তিনি। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, দুপুরে আচমকা কয়েক জন বাড়িতে ঢুকে প্রশান্তকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। দিনহাটা মহকুমা হাসপাতাল থেকে প্রশান্তের দেহ কোচবিহারে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল সেই সময় দিনহাটার পুঁটিমারিতে সেই গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। তাঁদের দাবি উপযুক্ত মর্যাদায় দেহ নিয়ে যেতে হবে। সাধারণ গাড়ির পরিবর্তে অ্যাম্বুল্যান্সে দেহ নিয়ে যাওয়ার দাবি তোলা হয়। পাশাপাশি অবিলম্বে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবি করা হয়।
অন্য দিকে, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘তৃণমূল এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবে যুক্ত নয়।’’ তাঁর দাবি, ‘‘প্রশান্তের খুনের ঘটনায় তিনটি কারণ থাকতে পারে। প্রথমত, বিজেপির অন্তর্কলহ, দ্বিতীয়ত সমাজবিরোধী কার্যকলাপ। কারণ, প্রশান্ত একজন সমাজবিরোধী ছিল। আর তৃতীয় কারণ হতে পারে বন্দুক নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা। নাড়াচাড়া করতে গিয়ে নিজের বন্দুকের গুলি লেগেছে, এমনটাও হতে পারে। কারণ, প্রশান্ত নিজের কাছে সব সময় তিনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখতেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’’
এই ঘটনা নিয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমার সানি বলেন, ‘‘প্রশান্তের মাথায় একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। বাড়িতেই তাঁর মৃত্যু হয়। শনিবার দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। পুরো বিষয়টি তদন্তে নেমেছে পুলিশ।’’