সমবেত: গাজলে শুভেন্দুর সভামঞ্চের নীচে মহিলা কর্মীদের সঙ্গে দীপালি বিশ্বাস (হলুদ চাদর) মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
এক বার নয়, তাঁর ‘অনুগামী’ হয়ে দল বদলেছেন দু’বার। মঙ্গলবার, নিজের খাসতালুকেই দলের সভামঞ্চে জায়গা পেলেন না তিনি। এমনকি, যাঁর হাত ধরে দু’বার দল বদলেছেন, সে নেতাও তাঁর নাম নিলেন না। তিনি মালদহের গাজলের প্রাক্তন বিধায়ক তথা বিজেপির উত্তর মালদহ সংগঠনের সহ-সভাপতি দীপালি বিশ্বাস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে তিনি সিপিএম থেকে তৃণমূল ঘুরে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।
গাজলের শঙ্করপুর মাঠে এ দিন দুপুরে শুভেন্দু সাংগঠনিক সভা করলেও তাঁর নাম না না নেওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন দীপালি। তিনি বলেন, ‘‘পাপ করেছিলাম। পাপের ফল ভোগ করতে হচ্ছে।’’ এর পরে তিনি আরও বলেন, ‘‘সভাস্থলে গিয়েছিলাম। তবে আমাকে মঞ্চে উঠতে দেওয়া হয়নি। কেন দেওয়া হয়নি তা বলতে পারব না। আমি বিজেপিতেই আছি।’’ বিজেপির উত্তর মালদহের সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, ‘‘এ দিন নেতা, কর্মীদের নিয়ে সাংগঠনিক সভা করা হয়েছে। সভায় হাজির সকলেই কেউ বুথের, কেউ বা মণ্ডলের নেতা, নেত্রী। সবাইকে তো আর মঞ্চে জায়গা দেওয়া যায় না।’’
দীপালি বিশ্বাস ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে গাজল থেকে সিপিএমের টিকিটে জয়ী হয়েছিলেন। সে সময় মালদহের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। ওই বছরই কলকাতায় ২১ জুলাই মঞ্চে শুভেন্দুর হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দেন দীপালি। ২০২০ সালের ১৯ ডিসেম্বর, মেদিনীপুরে অমিত শাহের সভায় ফের শুভেন্দুরই হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন তিনি। ২০২১ বিধানসভা ভোটে বিজেপি তাঁকে প্রার্থী করেনি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হতে না পেরে কার্যত ‘নিষ্ক্রিয়’ হয়ে পড়েন দীপালি। গত বছর ২৬ জানুয়ারি দীপালিকে উত্তর মালদহের সহ-সভাপতি করে বিজেপি।
দলবদলের পরে, এ দিনই প্রথম গাজলে সভা করলেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নিজেও সে কথা সভায় জানান। তিনি বলেন, ‘‘উত্তর মালদহে দু’টি সভা করলাম। পুরাতন মালদহে গরমের সময় মিছিল ও সভা করেছিলাম। এ দিন কনকনে ঠান্ডায় গাজলে সভা করলাম। এ বারও সভায় মানুষের ভিড় উপচে পড়েছে। প্রায় ২০ হাজার মানুষের জমায়েত হবে।’’
দীপালিও সভাস্থলে ছিলেন। সভামঞ্চের নীচে বিজেপির মহিলা নেত্রীদের সঙ্গে শুভেন্দুকে স্বাগত জানাতে অপেক্ষায় ছিলেন। শুভেন্দুর মুখে তাঁর নাম না থাকায় সভা শেষ হতেই মাঠ ছাড়েন দীপালি।