‘খোঁজ রাখুন নিজের এলাকায়’

তৃণমূল নেতাদের মুখে বারবার অভিযোগ শোনা গিয়েছে, নয়া আইন করে বিজেপি ইচ্ছেমতো বিপক্ষের ভোটারদের বাদ দেবে। এ দিন দলের নেতাদের উদ্দেশে অরবিন্দ মেনন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের জন্য নয়া আইন আর্শীবাদ। অনুপ্রবেশকারীরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে বিজেপি আগামী ৫০ বছর রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবে।”

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ জানুয়ারি ২০২০ ০৫:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিজের এলাকায় নাগরিক তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হল বিজেপির বুথ তথা মণ্ডল সভাপতিদের। এলাকায় কোনও ‘অনুপ্রবেশকারী’ রয়েছে কি না, তা চিহ্নিত করার দায়িত্বও দেওয়া হল বিজেপির স্থানীয় নেতাদের। এলাকায় ‘শরণার্থী’ কারা রয়েছেন, তারও তালিকা করে রাখতে বলা হল ওই নেতাদের। সংশোধিত নাগরিক আইন নিয়ে দলের কৌশল বোঝাতে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলার নেতাদের নিয়ে বিজেপির ‘পার্টি ক্লাস’ ছিল জলপাইগুড়িতে। ডাকা হয়েছিল শুধু জেলা সভাপতি এবং মণ্ডল সভাপতিদের। সেই ক্লাসে মূলত তিনটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি ছাড়া আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, দার্জিলিং এবং শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা নেতাদের এই নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সে সময়ে মঞ্চে ছিলেন রাজ্য বিজেপির সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন এবং রাজ্যের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কিশোর বর্মণ।

Advertisement

নয়া নাগরিক আইনে কী কী সংস্থান রয়েছে তা দলের নেতাদের বুঝিয়ে বলার পরেই প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ, “আপনার এলাকায় কারা নাগরিক তাঁর তালিকা করে রাখুন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে আইন বোঝান, কোনও অনুপ্রবেশকারী থাকলে চিহ্নিত করুন। তৃণমূল অনুপ্রবেশকারীদের নাম ভোটার তালিকায় ঢোকাতে চাইছে।” এলাকায় কত জন শরণার্থী রয়েছেন, যাঁরা এখনও নাগরিক নন, সেই তালিকাও করতে বলা হয়েছে এ দিন। নির্দেশ পেয়ে বিজেপির মণ্ডল সভাপতিদের একাংশের মনে প্রশ্ন জেগেছে, তাঁরা কেন তালিকা করবেন?

নাগরিকত্ব আইনে কে নাগরিক হবে, তার তালিকা তৈরি করা পুরোটা সরকারি প্রক্রিয়া। তা হলে বিজেপি নেতাদের পৃথক তালিকা তৈরি করতে কেন বলা হচ্ছে? এক মণ্ডল সভাপতির কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা এসে তালিকা করবেন। কিন্তু এ দিনের ক্লাসে যা ইঙ্গিত, তাতে মনে হচ্ছে সরকারি কর্মীকে সহযোগিতা করতে কিছু স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। দলের কর্মীদেরই সেই দায়িত্ব দেওয়া হবে।”

Advertisement

তৃণমূল নেতাদের মুখে বারবার অভিযোগ শোনা গিয়েছে, নয়া আইন করে বিজেপি ইচ্ছেমতো বিপক্ষের ভোটারদের বাদ দেবে। এ দিন দলের নেতাদের উদ্দেশে অরবিন্দ মেনন বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের জন্য নয়া আইন আর্শীবাদ। অনুপ্রবেশকারীরা ভোটার তালিকা থেকে বাদ গেলে বিজেপি আগামী ৫০ বছর রাজ্যে ক্ষমতায় থাকবে।”

যা শুনে জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর মন্তব্য, “ঝোলা থেকে বেড়াল ধীরে ধীরে বের হচ্ছে। নিজেদের নেতাদের দিয়ে নাগরিক তালিকা তৈরি করে বিভাজনের নীতি প্রয়োগ করে বিরোধীদের সব নাম ভোটার তালিকা থেকে কাটতে চাইছে বিজেপি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement