ফাইল চিত্র।
লক্ষ্য বিধানসভা। সেদিকে নজর রেখে কোচবিহারে দল গোছানোর কাজ শুরু করে দিতে চলেছে বিজেপি। পরিকল্পনা রয়েছে, সদস্য সংগ্রহ অভিযানে নেমে বুথে বুথে দলের প্রচার তুঙ্গে তুলে নিয়ে যাওয়া। বিজেপি সূত্রের খবর, সবমিলিয়ে এবারে জেলায় প্রায় আড়াই লক্ষ সদস্য সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ময়দানে নামছেন তারা।
প্রতি বুথ থেকে একশো জন করে সদস্য নথিভুক্ত করা হবে। বৃহস্পতিবার জেলার মণ্ডল কমিটির দায়িত্বে থাকা নেতাদের নিয়ে ওই বিষয়ে একটি বৈঠক করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা। তিনি বলেন, “প্রতি বুথ থেকে একশো জন করে সদস্য করা হবে। দলের নিয়ম মেনে ওই সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলবে। মোবাইলের মাধ্যমে যেমন সদস্য সংগ্রহ হবে, তেমনই আবার সরাসরি সদস্য সংগ্রহ করা হবে।”
দলীয় সূত্রের খবর, আগামী ৬ জুলাই থেকে বিজেপি’র সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হবে। তা চলবে ১০ অগষ্ট পর্যন্ত। সেই কাজে মণ্ডল ভিত্তিক একজনকে ‘প্রমুখ’ করা হবে। তাঁর সঙ্গে থাকবেন সহকারি প্রমুখ। সেই সঙ্গেই সাংসদ থেকে শুরু করে জেলা সভানেত্রী, দলের সমস্ত জন প্রতিনিধি থেকে শুরু করে সমস্ত স্তরের নেতারাও নামবেন সদস্য সংগ্রহ অভিযানে। প্রত্যেককে নিজের নিজের বুথে সদস্য সংগ্রহ করতে হবে।
গত দু’বছর ধরে জেলায় সদস্য সংগ্রহে জোর দিয়েছে বিজেপি। এর আগে ‘মিস্ডকলে’র মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ করা হয়েছে। সেই সদস্যের সংখ্যা এক লক্ষের উপরে রয়েছে বলে জেলা সভানেত্রী দাবি করেন। এবারে কোচবিহার লোকসভা আসনে দল জয়ী হয়েছে। তারপর থেকে বিজেপিতে যোগদানের হিড়িক শুরু হয়েছে বলে তিনি দাবি করলেন। বিভিন্ন দল থেকে কর্মী-সমর্থকরা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। আবার কমবয়েসিদের মধ্যেও বিজেপিতে যোগ দিতে দেখা যাচ্ছে। তাই লক্ষ্যপূরণে তাঁদের সমস্যা হবে না বলে তিনি জানান।
কোচবিহার জেলায় ন’টি বিধানসভা কেন্দ্র। বুথসংখ্যা আড়াই হাজারের মতো। ন’টি বিধাসভার মধ্যে এখন আটটিতে তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক রয়েছেন। একটিতে ফরওয়ার্ড ব্লকের। লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলে কোচবিহার জেলার সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা কোচবিহার উত্তর, কোচবিহার দক্ষিণ, দিনহাটা, মাথাভাঙা এবং নাটাবাড়ি বিধানসভা কেন্দ্রে বড় মার্জিনে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। ওই লোকসভার বাকি দু’টি বিধানসভার মধ্যে সিতাইতে ৩৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে এবং শীতলখুচিতে এক হাজারের কিছু বেশি ভোটে লিড নিয়েছে তৃণমূল। তবে ভোটের পর সিতায়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া এলাকা ছাড়া হয়ে রয়েছেন। সেই সঙ্গে আলিপুরদুয়ার লোকসভার মধ্যে থাকা কোচবিহার জেলার বিধানসভা কেন্দ্র তুফানগঞ্জ এবং জলপাইগুড়ির মধ্যে থাকা কোচবিহারের মেখলিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র দু’টিতেই লিড নিয়েছে বিজেপি। এই অবস্থায় আগামী বিধানসভায় ন’টি আসন জিততে এবার সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচিতে নামতে চলেছে বিজেপি।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলার কার্যকরী সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় দাবি করেন, “লোকসভায় যা হয়েছে, বিধানসভায় তা হবে না। তা ছাড়া দুটো ভোট সম্পূর্ণ আলাদা। মানুষ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছেন।”