—ফাইল চিত্র।
কথা ছিল জেলা পরিষদ ও গঙ্গারামপুর পুরসভা বিজেপির হাতে তুলে দেবেন তিনি। কিন্তুপারলেন না। তৃণমূলের একদা দোর্দণ্ডপ্রতাপ তথা অধুনা বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্রের হাত থেকে সোমবারই হাতছাড়া হয়েছে পুরসভা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পরিষদের সদস্যরাও একে একে সঙ্গ ছাড়ছেন। এই অবস্থায় বিপ্লবকে বিজেপিতে নিয়ে আদৌ কতটা লাভ হচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতাদের একাংশ। তবে, এই অবস্থাতেও দমতে নারাজ বিপ্লব।
তিনি বলেন, ‘‘আমি রাজ্য সরকারের থাবা থেকে ১০ জন জেলা পরিষদের সদস্যদের নিয়ে এসে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলাম। তাঁদের ধরে রাখা আমার একার দায়িত্ব নয়। তাঁদের মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে সাময়িক ভাবে তৃণমূল নিতে পেরেছে। সঠিক সময়ে আবার তাঁরা ফিরে আসবেন। জেলা পরিষদ বিজেপির দখলেই থাকবে। আর পুরসভাতেও যে ভাবে পুলিশ প্রশাসন দিয়ে ভোট করা হল তারপরে মন্তব্য করা নিষ্প্রয়োজন। তবে এই সব করে আমায় কেউ দমাতে পারবে না।’’
গত ২৪ জুন জেলা পরিষদের ১৮ জন সদস্যের মধ্যে সভাধিপতি সহ ১০ জন সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের হাত ধরে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান বিপ্লব। সেদিন বিপ্লবের ভাই তথা গঙ্গারামপুর পুরসভার পুরপ্রধান প্রশান্ত মিত্র বিজেপিতে যোগ না দিলেও অচিরেই তিনিও যে বিজেপিতে যাবেন তারও ইঙ্গিত মেলে। কিন্তু পুরসভার সংখ্যা গরিষ্ঠ কাউন্সিলর নিজের পক্ষে নিতে না পারার কারণে দাদার সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দেননি প্রশান্ত। এ দিকে বিপ্লবের বিজেপিতে যোগদানের খবর প্রকাশ হতেই বিজেপি নেতাদের একাংশ সোশ্যাল মিডিয়ার ক্ষোভ উগরে দেন। সেই ক্ষোভের আবহেই পুরসভা ও জেলা পরিষদ বিজেপিকে ‘উপহার’ দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব বিপ্লবকে বিজেপিতে শামিল করেন। কিন্তু বেশি দিন জেলা পরিষদ ও পুরসভায় বিপ্লবের কর্তৃত্ব বজায় থাকেনি। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অর্পিতা ঘোষের নেতৃত্বে একের পর এক সদস্য বিপ্লবের হাত ছেড়ে আবার তৃণমূলে যোগ দেন। ১০ জনের সেই সদস্য সংখ্যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ছয় জনে।
পুরপ্রধানের পদ থেকেও প্রশান্তকে অপসারিত করে পুরসভার ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছেন অর্পিতা। কাজেই মাত্র দেড় মাসের মধ্যেই এই ভাবে একের পর এক ধাক্কা খাওয়ায় বিপ্লবের গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই বিজেপির অন্দরে প্রশ্ন উঠেছে। বিজেপি নেতাদের একাংশের দাবি, দলের পুরনো কর্মীদের ওজর আপত্তি না মেনে বিপ্লবকে দলে নিলেও আখেরে নিট ফল ‘শূন্য’। যদিও এমনটা মানতে রাজি নয় বিজেপি জেলা নেতৃত্ব। জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বাপি সরকার বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিপ্লববাবুকে দলে নিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিষয়টি দেখছেন। আমাদের কাজ নেতৃত্বের নির্দেশ মানা। তবে উনিও চেষ্টা করেছেন। তবে বিজেপিতে কোনও ব্যক্তির থাকা না থাকা, দলের উপরে কোনও প্রভাব ফেলে না।’’