বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে পাঁচ বছর আগের মিস্ড কলকেই আপাতত মাধ্যম করার সিদ্ধান্ত বিজেপির।
পাঁচ বছর আগে যাঁরা মোবাইলে ‘মিস্ড কল’ দিয়েছিলেন, তাঁদের বাড়িতে নেতাদের পাঠাবে বিজেপি। গত লোকসভা ভোটে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পরে দেশ জুড়ে মোদী-হাওয়াকে কাজে লাগাতে মিস্ড কলের মাধ্যমে সদস্য করেছিল বিজেপি। এক এক জেলায় লক্ষাধিক সদস্য হয়েছিল বলে দাবি বিজেপির। যদিও মিস্ড কলে সদস্য হওয়া কর্মীদের বেশিরভাগকেই মিটিং মিছিলে পাওয়া তো দূরের কথা, চোখেও দেখা যায়নি বলে জালে নেতাদের একাংশের দাবি। এবার সেই সব সদস্যের নাম, ফোন নম্বর, বাড়ির ঠিকানা সহ তালিকা বিজেপির দিল্লির সদর থেকে জেলায় জেলায় আসা শুরু হয়েছে। দলের নেতাদের কাছে নির্দেশ এসেছে মিস্ড কল দেওয়া ওই সব ‘কর্মীর’ বাড়িতে যেতে হবে। বাড়ি গিয়ে ফের তাঁদের দিয়ে দিল্লির একটি নম্বরে মিস্ড কল দেওয়াতে হবে। ওই ব্যক্তি রাজি থাকলে তাঁর বাড়ির সামনে স্টিকারও লাগিয়ে দেবে বিজেপি। স্টিকারে লেখা থাকবে ‘আমরা বিজেপি পরিবার’।
লোকসভা ভোটের আগে বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে পাঁচ বছর আগের মিস্ড কলকেই আপাতত মাধ্যম করার সিদ্ধান্ত বিজেপির। সেই সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে কারা সুবিধে পেয়েছেন সেই তালিকাও জেলা পাঠাচ্ছে বিজেপি। তাঁদের বাড়ি গিয়েও প্রচারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জলপাইগুড়ি জেলায় দুই তালিকাই চলে এসেছে বলে খবর। পান্ডাপাড়ার একটি ভবন থেকে বিভিন্ন ব্লক এবং বুথের নেতাদের হাতে সেই তালিকা দেওয়া হচ্ছে। বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক বাপি গোস্বামী শুধু বললেন, “দলের সদস্যর পূর্ণাঙ্গ তালিকা কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব আমাদের পাঠিয়েছে। আমরা সকলের বাড়ি যাব।”
চলতি মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় বিপুল ভিড় হওয়ায় জেলার সঙ্গে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতারাও খুশি। স্থির হয়েছে, জলপাইগুড়ি জেলা থেকেই জনসংযোগের এই কর্মসূচি শুরু হবে। নিচু তলায় ঠিকঠাক নির্দেশ মানা হচ্ছে কিনা তা বুঝতে যে বাড়িতে দলের নেতারা যাচ্ছেন সেই বাড়ির মিস্ড কল দেওয়া সদস্যকে দিয়ে ফের একটি মিস্ড কল দেওয়ানোর নির্দেশ এসেছে। সম্প্রতি রাজ্য সরকারের প্রকল্পে উপভোক্তাদের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা চিঠি বিলি করা হয়েছে। তার পাল্টা বিজেপি এবার কেন্দ্রের প্রকল্পে সুবিধে পাওয়াদের বাড়ি বাড়ি দলের নেতাদের পাঠাচ্ছেন। জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘খোদ প্রধানমন্ত্রী বাড়ি গেলেও রাজ্যবাসী বিজেপিকে ভোট দেবেন না।’’
দল সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি জেলায় ৮০ হাজারের বেশি বাসিন্দা মিস্ড কল দিয়ে পার্টির সদস্য হয়েছিলেন পাঁচ বছর আগে। গত কয়েক বছরে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন জেলার অন্তত ৪ লক্ষেরও বেশি বাসিন্দা। দিস্তা দিস্তা কাগজে লক্ষ লক্ষ নামের তালিকা আসা শুরু হয়েছে জলপাইগুড়ির পার্টি অফিসে।