মিছিল: আজ, বৃহস্পতিবার বন্ধ। তারই প্রচারে পথে নেমেছেন ট্রেড ইউনিয়নের সদস্যরা। বুধবার শিলিগুড়ির হিলকার্ট রোডে। ছবি: বিনোদ দাস
বন্ধের বিরোধিতায় এ বার কার্যত রাস্তায় নেই তৃণমূল। তা নিয়ে শাসকদলের মিছিল, সমাবেশও তেমন দেখা যায়নি। তৃণমূলের নেতাদের অনেকে জানিয়েছেন, যে সব কারণে বন্ধ ডাকা হয়েছে, সে সব কারণ তাঁরাও সমর্থন করেন। কিন্তু বন্ধ নয়। তৃণমূলের কয়েক জন নেতার বক্তব্য, ভোট-কাটাকুটির অঙ্কে এগিয়ে থাকতে বাম-কংগ্রেস জোটকে আরও শক্তিশালী করতে চাইছে রাজ্যের শাসকদল। এ নিয়ে বিজেপির অভিযোগ— বাংলায় বামদের পিছন থেকে মদত দিচ্ছে তৃণমূল। কোচবিহারেও সেই একই ছবি।
তৃণমূলের রাজ্য সহ-সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ এ নিয়ে বলেন, ‘‘বন্ধের ইস্যুগুলিকে আমরা সমর্থন করি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ, সভা-সমাবেশ চলছে। কিন্তু বন্ধ সমর্থন করি না। তাতে মানুষের ক্ষতি হয়।” কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘আমরা জনজীবন স্বাভাবিক রাখতে সবার কাছে আবেদন জানিয়েছি।”
নয়া কৃষি আইন থেকে শুরু করে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক জনবিরোধী পদক্ষেপের অভিযোগ তুলে প্রতিবাদে বন্ধ ডেকেছে বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন। বনধের সমর্থনে কয়েক দিন ধরে জেলা জুড়ে প্রচার করা হয়েছে। শহরে মহামিছিলও হয়েছে। কিন্তু জেলাবাসীর একাংশের বক্তব্য, বিরোধীদের ডাকা অন্য বন্ধের বিরুদ্ধে তৃণমূল আগে রাস্তায় নামলেও, এ বার এখনও পর্যন্ত বনধের বিরোধিতায় তাদের দেখা যায়নি।
বাম নেতা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “কেন্দ্রের আইনে কৃষক ক্রীতদাসে পরিণত হচ্ছেন। শ্রমিকদের ৮ ঘণ্টার জায়গায় ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হবে। মজুরি বাড়বে না। যে কোনও মুহূর্তে শ্রমিকদের ছাটাই করতে পারবেন মালিকপক্ষ। এমন অবস্থায় সাধারণ মানুষই প্রতিরোধ গড়ে তুলছেন।”
গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার আসনটি তৃণমূলের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। ফল বিশ্লেষণের পরে জেলাবাসীর অনেকেই দাবি করেন, বামেদের ভোটের বড় অংশ বিজেপির পক্ষে চলে গিয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে বামেরা কোমর বেঁধে ময়দানে নেমেছে। জেলার বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, তৃণমূলও চাইছে বামেরা নিজেদের ভোট পুনরুদ্ধার করুক। তাতে কমবে বিজেপির ভোট।
তবে এ নিয়ে কোচবিহার জেলা বিজেপি সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “মানুষ বন্ধের বিরুদ্ধে। কোনও অঙ্কেই আর তৃণমূল, বাম, কংগ্রেসের লাভ হবে না।”