আজ ধুপগুড়ি উপনির্বাচনের ফল ঘোষণা। জলপাইগুড়িতে বৃহস্পতিবার গণনা কেন্দ্রের ভিতরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর কড়া পাহারা। ছবি:সন্দীপ পাল
গণনার আগের দিন, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে ভোটে সন্ত্রাসের কথা শোনা গেল বিজেপির মুখে। গণনা নিয়েও কারচুপির আশঙ্কা প্রকাশ করে ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনের সাধারণ পর্যবেক্ষককে নালিশ জানালেন জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়। পর্যবেক্ষক অবশ্য সে ব্যাপারে মন্তব্য করেননি।
গত মঙ্গলবার, ধূপগুড়ি উপনির্বাচনের ভোটের দিন বিজেপির কোনও নেতার মুখে সন্ত্রাসের অভিযোগ শোনা যায়নি। বিজেপির তরফে জেলা প্রশাসনকে মৌখিক বা লিখিত ভাবেও কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও মন্তব্য করেছিলেন, “ধূপগুড়িতে বেশ ভালই ভোট হচ্ছে। পঞ্চায়েতের মতো তৃণমূল ওখানে ভোট করাতে পারছে না।” রাজ্য বিজেপির তরফে ধূপগুড়ি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের কাছে একটি মাত্র অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তাতে সন্ত্রাসের উল্লেখ ছিল না। এ দিন অবশ্য সাংসদ জয়ন্ত রায় দাবি করেন, “ধূপগুড়িতে সন্ত্রাস করতে ভোটের দিন গুন্ডাদের নিয়ে গিয়েছিল তৃণমূল। কিছু বুথে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও ভোট হয়েছে। গণনাতেও ব্যাপক কারচুপি হতে পারে আশঙ্কা করে আমরা পর্যবেক্ষককে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলেছি।”
সন্ত্রাস হলে বিজেপি লিখিত ভাবে কেন অভিযোগ করল না? বিজেপি সাংসদের মন্তব্য, “এ দিন পর্যবেক্ষকে লিখিত ভাবে কিছু জানিয়েছি। কিছু আবার লেখা নেই, মুখে বলেছি।” হঠাৎ ধূপগুড়ি ভোট নিয়ে বিজেপি অবস্থান বদলাচ্ছে কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। জল্পনা তৈরি হয়েছে তবে কি বুথ থেকে উঠে আসা রিপোর্টে দলের ফলাফল খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে! বিশেষত, গত মঙ্গলবার ভোট শেষ হওয়ার পরে, বুধবারের প্রশাসনিক রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, ১৮টি বুথে গড়ের থেকে অস্বাভাবিক কম ভোট হয়েছে। এই বুথগুলি সবই বানারহাট ব্লকে। যে বানারহাট ব্লকে ভাল ভোট করানোর লক্ষ্য নিয়ে বিজেপি শুরু থেকে ঝাঁপিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, তা হলে কি সে সব এলাকায় দল পিছিয়ে পড়েছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে, না গণনার আগে প্রশাসনকে চাপে রাখতে বিজেপি সাংসদ সন্ত্রাস-কারচুপির অভিযোগ সামনে এনেছেন? জেলা বিজেপি সভাপতি বাপি গোস্বামীর দাবি, “ফল ভাল হবে। তবে তৃণমূল সন্ত্রাসের চেষ্টা করেছে।”
পক্ষান্তরে, গণনাকেন্দ্রে কারা থাকবেন, তা এ দিন প্রশিক্ষণ চলেছে তৃণমূল শিবিরে। কর্মী-সমর্থকদের সংযত থাকার বার্তাও দিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূলের তরফে ধূপগুড়ি উপনির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা নেতা তথা শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গৌতম দেব বলেন, “গণনার আগের দিন ভোট নিয়ে অভিযোগ তোলার অর্থ একটাই, হার নিশ্চিত বুঝে অজুহাত খোঁজা। কোন দল, কী বলছে জানি না। আমরা আশাবাদী।” বামেদের তরফেও গণনা এজেন্টদের প্রশিক্ষণ হয়েছে। বামেদের তরফে অভিযোগ তোলা হয়নি। বাম প্রার্থী ঈশ্বরচন্দ্র রায় জানিয়েছেন, তাঁরা ফল নিয়ে আশাবাদী।