উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়। — ফাইল চিত্র।
আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন হয়ে পড়া নিয়ে এ বার সরব হল গেরুয়া শিবির। এ নিয়ে বুধবার রাজ্যের উচ্চ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি পাঠিয়েছেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তাঁর অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন ভবন নির্মাণ ও বিভিন্ন পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতেই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়কে অভিভাবকহীন করেছে। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
২০২০-র ২৩ ডিসেম্বর আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য হিসাবে কাজে যোগ দেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মহেন্দ্রনাথ রায়। টানা দু’বছর অর্থাৎ, গত ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিনি ওই পদে ছিলেন। তার পরে ওই পদে তাঁর আর মেয়াদ বৃদ্ধি না হওয়ায় নিজের পুরনো প্রতিষ্ঠান উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যান মহেন্দ্রনাথ। তার পর থেকেই উপাচার্যহীন অবস্থায় রয়েছে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়।
বিষয়টি নিয়ে এ দিন সরব হয় গেরুয়া শিবির। বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের অভিযোগ, “রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ হিসাবে এত শিক্ষিত ও নিজের যোগ্যতা বলে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদে বসা মহেন্দ্রনাথ রায়কে দেখে বহু ছাত্র-ছাত্রী অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। তার পরেও তাঁকে এ ভাবে সরিয়ে দেওয়াটা অপমানের।”
এর পরেই বিজেপি বিধায়ক অভিযোগ করেন, “কয়েক কোটি টাকা খরচ করে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ভবন তৈরি হবে। নতুন বিভিন্ন পদে নিয়োগও হবে। এই দু’ক্ষেত্রে নিজেদের একচ্ছত্রাধিপত্ত কায়েম করতেই তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী, যাঁরা আগেও রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করেছিলেন, তাঁরা পিছন থেকে কলকাঠি নেড়ে মহেন্দ্রনাথ রায়কে সরিয়ে দিলেন। কারণ, মহেন্দ্রনাথ রায় উপাচার্য থাকায় তাঁদের সমস্যা হচ্ছিল।” একই সঙ্গে সুমন বলেন, “উপাচার্যের বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না করেই নবগঠিত আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়কে এ ভাবে অভিভাবকহীন করে দেওয়াটাও আমাদের অবাক করেছে। সে জন্যই এ দিন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুকে চিঠি দিয়েছি।’’
আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক সৌরভ চক্রবর্তী পাল্টা বলেন, “বিজেপি বিধায়ক উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। ওঁর জেনে রাখা উচিত, আমরাই অধ্যাপক মহেন্দ্রনাথ রায়কে আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য করে নিয়ে এসেছিলাম। উনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকুন, সেটা আমরাও চাই। কিন্তু মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়াতেই, ওঁকে চলে যেতে হয়েছে। ওঁকে উপাচার্যের পদ থেকে সরানো হয়নি। এর পরে রাজ্য সরকার ফের বিজ্ঞপ্তি জারি করলেই নতুন উপাচার্য নিযুক্ত হবেন। আমরাও সে অপেক্ষায় রয়েছি।”