রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড়ের পঞ্চায়েত স্তরে নিয়োগের কমিটি বাতিলের দাবি নিয়ে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের দ্বারস্থ হল বিজেপি। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত সোমবার রাজ্য সরকারের তরফে বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েতের শূন্যপদে নিয়োগের জন্য ‘ডিস্ট্রিক্ট লেবেল সিলেকশন কমিটি’ (ডিএলএসসি) গঠনের নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। জেলাশাসকদের মাথায় রেখে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে দার্জিলিং এবং কালিম্পং জেলার পাহাড়ের জন্য একেবারে আলাদা একটি সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, জেলায় জেলায় সাংসদ, বিধায়ক থেকে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের রাখা হলেও পরিকল্পিত ভাবে বাদ দেওয়া হয়েছে পাহাড়কে।
বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তা বলেছেন, ‘‘নবান্ন থেকে প্রশাসনের আমলা দিয়ে পাহাড়ে কাজ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিরা না থাকায় নিয়োগ বা কাজের নজরদারি হবে না। তৃণমূল সরকার সেটাই চাইছে।’’ তাঁর অভিযোগ, রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ-দুর্নীতি সামনে এসেছে এবং পঞ্চায়েতেও শাসক দল সেটাই করতে চলেছে।
রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটের পরে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের বিভিন্ন ফাঁকা পদে কর্মী নিয়োগ হবে বলে ঠিক হয়েছে। রাজ্যের সমতল এলাকায় এই প্রক্রিয়া আগে হলেও পাহাড়ে প্রায় দু’দশক পরে নিয়োগ হবে। ২০০০ সালের পর ২০২৩ সালে পাহাড়ে দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হয়েছে। সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবে প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার দখলেই পাহাড়ের বেশির ভাগ দ্বিস্তরীয় পঞ্চায়েত। পাহাড়ের সাংসদ বিজেপির, দার্জিলি ও কার্শিয়াঙের বিধায়ক বিজেপির। শুধুমাত্র কালিম্পঙের বিধায়ক প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার। বিজেপির অভিযোগ, সরকারি অফিসারদের কমিটিতে রেখে তৃণমূল এবং প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা সব করবে বলেই বিধায়ক-সাংসদদের বাদ দেওয়া হয়েছে।
গত দু’দশক পাহাড়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। ২০০০ সালের পর থেকে ধীরে ধীরে পঞ্চায়েতগুলি নিষ্ক্রিয় হতে থাকে। অবসরের পরে নতুন করে কোথাও কর্মীও সে ভাবে নিয়োগ করা হয়নি। ব্লক অফিসের মাধ্যমেই নাগরিক পরিষেবার কাজ হচ্ছিল। এ বার নতুন করে ১২২টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ন’টি পঞ্চায়েত সমিতিতে প্রয়োজন মতো কর্মী নিয়োগ করা হবে। তার ফলে পরিষেবার কাজ সুচারু ভাবে করা যাবে বলে পাহাড়ের শাসক দল মনে করছে।
গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ) প্রধান অনীত থাপা অবশ্য বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘‘বিজেপি সব কিছুতেই নেতিবাচক। পাহাড়ে বিরোধিতা ছাড়া কিছুই নেই। পাহাড়ের শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা কাজ পাবেন। তাঁদের কর্মসংস্থান হবে।’’ অনীতের বক্তব্য, সবটাই সরকারি অফিসারেরা করবেন এবং এতে দলের লোকজন নেই।